সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের দুই শিল্প মহারথি মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানির (Ambani and Adani) মধ্যে শুরু হল এবার নয়া প্রতিযোগিতা। হ্যাঁ, এবার পেট্রোকেমিক্যাল খাতে লড়াই জমে উঠেছে দুই ধনকুবেরের মধ্যে। গৌতম আদানির আদানি গ্রুপ এবার সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল মুকেশ আম্বানিকে। লক্ষ্য একটাই, দেশে পিভিসি উৎপাদনে শীর্ষে পৌঁছানো।
কোথায় শুরু হচ্ছে আদানির প্রকল্প?
জানা গেল, গুজরাটের মুন্দ্রায় আদানি গ্রুপ 10 লক্ষ টন বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিরাট পিভিসি প্ল্যান্ট গড়ে তুলতে চলেছে। আর যেটি 2027-28 অর্থবছর মধ্যেই পুরোপুরি কার্যকর হবে বলেই খবর। আর এই কারখানা শুধুমাত্র পিভিসি নয়, বরং ক্যালসিয়াম কার্বাইড, অ্যাসিটিলিন ভিত্তিক বিভিন্ন পণ্যও তৈরি করবে। আদানি গ্রুপ ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং প্রশাসনিক সবুজ সংকেত পেয়ে গিয়েছে বলে জানা গেল।
কেন পেট্রোকেমিক্যাল খাতে আদানির আগ্রহ?
বলে রাখি, পিভিসি বা পলিভিনাইল ক্লোরাইড মূলত সিন্থেটিক, প্লাস্টিক বা পলিমারেই ব্যবহৃত হয়। হ্যাঁ, পাইপ থেকে শুরু করে দরজার ফ্রেম, ফ্লোরিং, ক্রেডিট কার্ড, খেলনা সহ বিভিন্ন শিল্প পণ্যে এর ব্যবহারে জুড়িমেলা ভার। বর্তমানে ভারতে প্রায় 4 মিলিয়ন টন বার্ষিক পিভিসি’র চাহিদা রয়েছে। তবে উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র 1.59 মিলিয়ন। আর এর অর্ধেকই আসে প্রায় রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে। তবে সেখানে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করতে চলেছে আদানি।
তবে জানিয়ে রাখি, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বার্ষিক পিভিসি উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় 7.5 লক্ষ টন। আর রিলায়েন্সের কারখানার রয়েছে হাজিরা, দাহেজ এবং ভদোদরায়। তবে রিলায়েন্স লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে 2027-র মধ্যে এই উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ তৈরি করা। অন্যদিকে আদানি গ্রুপের মুন্দ্রা প্ল্যান্টের প্রথম ধাপেই 10 লক্ষ টন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ভবিষ্যতে তা বাড়িয়ে 20 লক্ষ টন করা হতে পারে। আর এখানেই শুরু হচ্ছে প্রতিযোগিতা।
আরও পড়ুনঃ অযোগ্যদের নিয়ে সওয়াল করে পুড়ল মুখ! হাইকোর্টে বিরাট ঝটকা খেল SSC
জানিয়ে রাখি, 2023 সালে হিন্দেনবার্গ রিপোর্টের কারণে এই প্রকল্প একবার থেমে গিয়েছিল। তবে আবারো তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জানা যাচ্ছে, আদানি গ্রুপ প্রায় 5 বিলিয়ন ডলারের ঋণ এবং ইকুইটি ফান্ড সংগ্রহ করেছে এই প্রকল্পের জন্য। এখন শুধু বাস্তবে রূপ নেওয়ার পালা। যদিও এর আগে দুই শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানি আলাদা আলাদা খাতে নিজেদের ব্যবসা করতেন। তবে এখন পেট্রোকেমিক্যাল খাতে দুই ব্যবসায়ী পথে নামতে চলেছে। এখন দেখার শেষ হাসি কে হাসে।