২০০ কিমির পথ কমে ৪০ মিনিট! ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু জুড়বে অসম, মেঘালয়, বাংলাকে

সহেলি মিত্র, কলকাতা: ভারতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এত দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে যে কেবল ভারতীয়রাই নয়, সমগ্র বিশ্ব অবাক। হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রো, রেলপথ, বুলেট ট্রেন, ফ্লাইওভার এবং সেতু নির্মাণে একের পর এক মাইলফলক অর্জন করচ্ছে ভারত। তবে এখানেই শেষ নয়, এই তালিকায় আরও একটি নাম যুক্ত হতে চলেছে, তা হল দেশের প্রশস্ত এবং গভীরতম নদীর উপর সেতু নির্মাণ। তৈরী হচ্ছে ফুলবাড়ী-ধুবড়ি ব্রিজ।

তৈরি হচ্ছে ভারতের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ব্রিজ

সকলেই জানেন যে গঙ্গা দেশের দীর্ঘতম নদী, কিন্তু আপনি কি জানেন যে ব্রহ্মপুত্রকে দেশের প্রশস্ত এবং গভীরতম নদী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই নদীর গড় গভীরতা ৩৮ মিটার। গভীরতম এবং প্রশস্ততম নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং কাজ হবে। কিন্তু, ইঞ্জিনিয়ারা এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছেন এবং  এমন এক বিস্ময় দেখিয়েছেন যে সমগ্র বিশ্ব এটির প্রশংসা করে। দেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতুটি এই নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে এবং এর ৫৯ শতাংশ কাজ এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে এই সেতুটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

এই সেতুটি কোথায় নির্মিত হচ্ছে?

মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম গারো পাহাড়ের ফুলবাড়ি এবং আসামের ধুবড়ি জেলার মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর এই সেতুটি নির্মিত হচ্ছে। এই সেতুর দৈর্ঘ্য ১৯.২৮ কিলোমিটার, যা দেশের দীর্ঘতম নদী সেতু হিসেবে বিবেচিত। এই সেতুটি নির্মাণের ফলে দুই রাজ্যের মধ্যে দূরত্ব সম্পূর্ণরূপে কমে যাবে। বর্তমানে, এই দূরত্ব অতিক্রম করতে পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যার জন্য বেশ কয়েক ঘন্টা সময় লাগে। লারসেন অ্যান্ড ট্রুবো কোম্পানি এটি নির্মাণ করছে।

সেতুটিতে কয়টি লেনের কাজ চলছে?

এই সেতুটি ৬ লেনের তৈরি হচ্ছে, যার মধ্যে ৪টি লেন যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে, এবং ২টি লেন যেকোনো জরুরি অবস্থার জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে। সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল এবং এটি ২০২৮ সালের সেপ্টেম্বরে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৯ কিলোমিটারের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই সেতুটি সম্পূর্ণরূপে পিলারের উপর নির্মিত হচ্ছে। এই প্রকল্পটি সম্পন্ন করার জন্য প্রায় ৩,৫০০ শ্রমিক নিযুক্ত করা হয়েছে। একটি জাপানি কোম্পানিও এই প্রকল্পে অর্থ সাহায্য করছে। এর নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ ‘OBC-র বদলে মুসলিমদের EWS-এ অন্তর্ভুক্ত!’ রাজ্য সরকারকে বিঁধে বড় পদক্ষেপ শুভেন্দুর

ধুবড়ি এবং ফুলবাড়ির মধ্যে সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর, আসাম এবং মেঘালয়ের মধ্যে দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার থেকে কমে মাত্র ২০ কিলোমিটারে নেমে আসবে। বর্তমানে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা সময় লাগে, কিন্তু সেতু নির্মাণের পর, এই দূরত্ব মাত্র ২০ মিনিটে অতিক্রম করা যাবে। শুধু আসাম, মেঘালয় নয়, সিকিম ও উত্তরবঙ্গকেও জুড়বে এই ব্রিজ।

Leave a Comment