প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের এক তৃণমূল কর্মী নেতার খুন! ভাঙড়ের পর এবার বীরভূমের সাঁইথিয়া অঞ্চলে খুন হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার। জানা গিয়েছে, গভীর রাতে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পীযূষ ঘোষকে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। এদিকে বছর ঘুরলেই ২০২৬-এ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট। আর সেই ভোটের আবহে একের পর এক তৃণমূল নেতাকর্মীর খুনের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে এক সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাত ১২টা নাগাদ এক নম্বর থেকে ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ওই তৃণমূল নেতা। এরপর ভোর প্রায় ৪টে নাগাদ রাস্তা থেকে উদ্ধার হয় তৃণমূল নেতার দেহ, পাশে রাখা ছিল তাঁর বাইক। তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে মাথার পেছনে গুলি করা হয় তাঁকে।
আর যে পরিস্থিতিতে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে এই খুন কোনও পরিচিতেরই কাজ। যদিও এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, সবটাই প্রাথমিক অনুমান বলে দাবি করা হচ্ছে।
এর আগেও পেয়েছিলেন হুমকি চিরকুট!
মৃত তৃণমূল নেতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ওই তৃণমূল নেতার দেহ উদ্ধার করার জন্য সাহায্য চেয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। তারপর স্থানীয়দের সাহায্যে তাঁর দেহ তুলে নিয়ে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে যায় পরিবার। মৃত তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীর অভিযোগ, এর আগেও ভোটের সময় বাড়িতে চিরকুট পাঠিয়ে নেতা ও তাঁর ছেলেকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। তখন থেকেই বেশ ভয়ে ভয়ে থাকত গোটা পরিবার। সম্ভবত, সভাপতির পদ থেকে সরাতেই এই খুন, এমনটাই মনে করছে পরিবার।
আটক করা হয়েছে ৩ জনকে
এদিকে তদন্তের শেষ আপডেট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলের সামনে থাকা একটি বাড়ি থেকে মৌসুমী মাল নামে এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিস। তাঁর পরিবারের দাবি, মৌসুমী তৃণমূল কংগ্রেস করতেন এবং পীযূষ ঘোষের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগ ছিল। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সবমিলিয়ে মোট তিনজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে দু’জন মহিলা। এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিসবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একাধিক পেশায় যুক্ত! কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর আইনজীবীর লাইসেন্স বাতিল করল হাইকোর্ট
অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে খুন হন শওকত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা বছর ৩৮ এর রাজ্জাক খাঁ। রাতে দলীয় বৈঠক থেকে বাড়ি ফেরার সময় খুন হন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে পরপর তিনটি গুলি করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
সেই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের সিপি মনোজ ভার্মা। তিনি সব কিছু খতিয়ে দেখেন। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে, এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। সব দিক খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।