সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বদলে যাচ্ছে বাংলার রেলের (Indian Railways) মানচিত্র! রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ রেল নির্মাণ সংস্থা টিটাগড় রেল সিস্টেম লিমিটেড এবার বিরাট বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে। শোনা যাচ্ছে, কোম্পানিটি নাকি 126.63 কোটি টাকার বিনিময়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে 99 বছরের জন্য লিজে 40 একর জমি নিচ্ছে, যেটি তাদের বর্তমান উৎপাদন কেন্দ্রের একেবারে পাশেই অবস্থিত।
কেন দরকার পড়ল এত বড় জমির?
Economic Times-র একটি রিপোর্ট মারফৎ জানা গিয়েছে, এই জমি মূলত বন্দে ভারত এবং মেট্রো কোচ নির্মাণের নতুন উৎপাদন পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্যই ব্যবহার করা হবে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে কোচ তৈরি ছাড়াও ট্রেনের ফার্মিং, টেস্টিং, কমিশনিং-র জন্য আলাদা আলাদা ইউনিট বসানো হবে। এমনকি নিজস্ব টেস্ট ট্র্যাক তৈরির পরিকল্পনা করেছে তারা। যেখানে ট্রেনগুলি ডেলিভারি হবে এবং পরিষেবা হবে আরো উন্নত।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, উত্তরপাড়ার কোটরং ও ভদ্রকালী মৌজায় অবস্থিত এই 40 একর জমিটি টিটাগড়ের বর্তমান 34 একর প্ল্যান্টের একদম কাছেই অবস্থিত। তাই পরিকাঠামোগত দিক থেকে এটিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই মনে করছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ। আর এই নতুন জমিতে আধুনিক মেশিনারি এবং প্রযুক্তি নির্ভর উৎপাদন গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে সংস্থাটি।
টার্গেট 200 কোটি টাকা
তবে এই প্রকল্প সম্প্রসারণ করার জন্য সংস্থাটি 200 কোটি টাকা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা জানিয়েছে যে, প্রোমোটারদের ও প্রেফারেনশিয়াল ইস্যুর মাধ্যমে ওয়ারেন্ট ইস্যু বানিয়ে এই তহবিল সংগ্রহ করা হবে। মূলত নতুন ব্র্যান্ড এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এই বিপুল পরিমাণ টাকা তোলা হবে। পাশাপাশি কর্মক্ষম মূলধনের মাধ্যমেও টাকা তোলা হবে বলে খবর।
জানিয়ে রাখি, 2025 সালের 31 মার্চ পর্যন্ত এই সংস্থার মোট অর্ডার বুক দাড়িয়েছে 11,200 কোটি টাকা। এর মধ্যে 62 শতাংশ যাত্রীবাহী কোচ এবং 38 শতাংশ মালবাহী কোচ সংক্রান্ত অর্ডার এসেছে। ফলে এই পরিসংখ্যানের মাধ্যমেই ভবিষ্যতে আরও বিরাট পরিসরে রেল নির্মাণ প্রকল্পের জন্য টিটাগড় প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ মাত্র ১৫০ মিনিটে ১২০০ কিমি! বিমানের থেকেও দ্রুত ম্যাগলেভ ট্রেন আনার পথে চিন
তবে এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো, 2024-25 অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাশিকে সংস্থাটির নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে 64.45 কোটি টাকা, যা বিগত বছরের তুলনায় 18.6 শতাংশ কম। তবে রাজস্বের দিক থেকে সংস্থাটি প্রায় 105.57 কোটি টাকা আয় করেছে। তবে এর মধ্যে 4.45 শতাংশ মূলধন হ্রাস পেয়েছে বলে সংস্থাটি দাবি করছে। কিন্তু নতুন জমি সম্প্রসারণের পরিকল্পনার দৌলতে এই ধাক্কা সেরকম প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছেন বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ।