সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ঝাড়গ্রামে (Jhargram) ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল তিন-তিনটি হাতির। হ্যাঁ, ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে। চারপাশ যখন নিস্তব্ধ, তখনই ছুটে আসছিল এক দ্রুতগামীর এক্সপ্রেক্স ট্রেন। আর মুহূর্তের মধ্যেই থেমে গেল তিনটি হাতির প্রাণ। একসঙ্গে দুটি হাতির শাবক এবং একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যু যেন গোটা বনাঞ্চলে শোকের ছায়া নামিয়ে আনল।
জানা গিয়েছে, রেললাইনের উপর দিয়ে চলার সময় জনশতাব্দী এক্সপ্রেস এসে পড়েছিল হাতির দলটির সামনে। ট্রেনটির গতি ছিল ভালোই। থামার সুযোগ ছিল না। ফল এক ধাক্কাতেই তিনটি হাতির মৃত্যু হয়। এমনকি ওই দলে মোট 10টি হাতি ছিল, যার মধ্যে তিনটির মৃত্যুর পর বাকি হাতিগুলি লাইনের উপর এসে দাঁড়ায়। ফলে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
কোথা থেকে এল ওই হাতির দল?
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকপাড়া রেঞ্জের বাঁশতলা এলাকায় এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল ওই হাতির দলটি। স্থানীয় বনকর্মীরা হাতিগুলো সরানোর চেষ্টা করছিলেন। আর এমন সময় ঘটে বিপত্তি। হাতির দলটি রেললাইন অতিক্রম করছিল। আর সেই সময় এসে পড়ে জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। প্রসঙ্গত, এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বাঁশতলা ও সরডিহা স্টেশনের মাঝে রাত 1টার সময়।
Result of Hulla Drive, again in Jhargram Div, 3 elephants run over by train at Banstola in midnight. The DFO claims they don’t drive elephants. DFO needs to be suspended immediately.
No measures taken on railway crossing points, when elephant drive was happening no coordination… pic.twitter.com/XwRb0WVv9S
— SAGE- Stripes And Green Earth Foundation (@SageEarth) July 18, 2025
সূত্রের খবর, ঘটনার পরপরই খড়গপুর-টাটা শাখায় ট্রেন চলাচল থমকে যায়। রাত পেরোতেই এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য। ভোর হতে দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় জমাতে থাকে স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি বন দপ্তরের আধিকারিকরা, পুলিশ ও রেল কর্মীরাও উপস্থিত হন। এদিকে ক্রেন ব্যবহার করে হাতির মৃতদেহগুলি সরানোর কাজ শুরু হয়। আর ওই সময় গোটা রেললাইন বন্ধ থাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ এবং রেল কর্মীরাও তৎপর হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুনঃ পহেলগাঁও হামলার জবাব! TRF-কে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ বলে চিহ্নিত করল আমেরিকা
ক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্থানীয়রা
স্থায়ী মানুষজনদের অভিযোগ, ঘটনার সময় প্রশিক্ষিত কোনও কর্মী না থাকায় এই দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি। বন দপ্তর এবং রেলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই তিনটি নিরীহ হাতির প্রাণ গিয়েছে। হাতি চলাচলের রেল করিডর হিসেবেই পরিচিত ওই অঞ্চল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সতর্কতা এবং নজরদারির অভাবে এরকম দুর্ঘটনা। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, রাতের বেলায় ট্রেন চালকদের সতর্ক করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না কেন? ইলেকট্রিক মনিটরিং সিস্টেম কোথায় ছিল? লাইনের উপর হাতির উপস্থিতির সংকেত কেন মেলেনি?