এক মেয়েকেই বিয়ে করল দুই ভাই! আজব কাণ্ড হিমাচল প্রদেশে, ভাইরাল ভিডিও

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আজব কাণ্ড! এক মেয়েকেই বিয়ে করল দুই ভাই! কী অবাক লাগছে শুনতে? আসলে ঠিকই পড়েছেন। আমাদের বাংলা, পাঞ্জাব, গুজরাট কিংবা অন্যান্য রাজ্যে বিয়ের রীতিনীতি আলাদা, সংস্কৃতিও আলাদা। কিন্তু হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) এই বিয়ে সম্প্রতি গোটা দেশের নজর কেড়েছে।

সম্প্রতি এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হিমাচলের সিরমৌর জেলার শিল্লাই গ্রামের দুই ভাই প্রদীপ নেগি এবং এবং কপিল নেগি কুনহাট গ্রামের বাসিন্দা সুনীতা চৌহানের নামের একটি মেয়ের সঙ্গেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। আর এই বিয়ে কোনও গোপনীয়তার মাধ্যমে হয়নি, বরং খোলাখুলি, আনন্দ-গর্ব ও সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই হয়েছে।

যদিও এটি কোনোরকম আধুনিক ঘটনা নয়, বরং বহু প্রাচীন দ্রৌপদী যুগের ঐতিহ্যবাহী পলিয়ান্ড্রি রীতির অংশ, যা হিমাচলের হট্টি সম্প্রদায়ের মধ্যে এখনও প্রচলিত রয়েছে। আর এই রীতি অনুযায়ী, একই পরিবারের ভাইয়েরা একজন স্ত্রীকে বিয়ে করে, যাতে পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় থাকে এবং পৈতৃক সম্পত্তি ভাগাভাগি না হয়।

সম্পূর্ণ পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে..

বলে রাখি, এই বিয়ে হয়েছে সম্পূর্ণ পারিবারিক সম্মতিতেই এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই। বড় ভাই প্রদীপ নেগি বর্তমানে জলশক্তি দপ্তরে কর্মরত। অন্যদিকে ছোট ভাই কপিল নেগি বিদেশে হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। তাদের কথায়, এটা আমাদের দুজনের পারস্পরিক সিদ্ধান্ত। বিশ্বাস, যত্ন ও দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার বন্ধনেই আমরা আবদ্ধ হয়েছি।

অন্যদিকে নববধূ সুনীতা অকপটে জানিয়েছেন, এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ছিল। কেউ আমাকে চাপ দেয়নি। ছোট থেকেই এই রীতি সম্পর্কে আমি জানতাম। সচেতন ভাবেই তাই এই পথ বেছে নিয়েছি। আমরা একসঙ্গে প্রতিজ্ঞা করেছি যে আমাদের বিশ্বাসের ভীত সবসময় মজবুত এবং আমরা সর্বদা একসঙ্গেই থাকব।

আরও পড়ুনঃ অর্থাভাবে হয়নি চিকিৎসা! ৫৩ বছর বয়সেই প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেতা ভেঙ্কট রাজ

প্রসঙ্গত, এই বিয়ের অনুষ্ঠান পুরো তিন দিন ধরে চলেছে। আর আশেপাশের গ্রাম থেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাই এই বিয়েতে হাজির হয়েছে। পরিবেশনও করা হয়েছে স্থানীয় ট্রান্সগিরি অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সব খাবার। আর বিয়ের মন্ডপে পাহাড়ি লোকগান, নাচের আসর সবকিছুর আয়োজন করা হয়েছে।

বর্তমান যুগে দাঁড়িয়ে যেখানে সম্পর্কের ধরনে পরিবর্তন আসছে, সেখানে এই প্রাচীন রীতিকে খোলাখুলি পালন করাটা ঠিক যেমন সাহসের, তেমনই সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকেও বাঁচিয়ে রাখছে। যদিও এই প্রথা দিনের পর দিন হারিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আধুনিকতার চাপে পড়ে হিমাচলের এই হট্টি সম্প্রদায় দেখিয়ে দিল যে, পুরনো রীতি এখনো পালন করা যায়।

Leave a Comment