প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: জোকা IIM বয়েজ হস্টেলের ধর্ষণকাণ্ড নিল এক নয়া মোড়! তরুণীকে ধর্ষণের অভিযুক্তকে আপাতত জামিন দিল আলিপুর আদালত। ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত শেষে শনিবার ধৃতকে আদালতে পেশ করা হয় আদালতে। দুই পক্ষের একাধিক অভিযোগের পর অবশেষে জামিনে মুক্ত অভিযুক্ত। তবে বিয়ে দেওয়া হল একাধিক শর্ত।
ঘটনাটি কী?
গত ১২ জুলাই নির্যাতিতা এক ছাত্রীর ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল IIM জোকার দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াকে। তদন্তের স্বার্থে গঠন করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দলও। সিট সূত্রের খবর, তদন্তে কোনও গাফিলতি রাখা হচ্ছে না। ডিজিটাল প্রমাণ, ঘটনাস্থলের ফরেন্সিক নমুনাও সংগ্রহ করা হলেও নেওয়া হয়নি নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষা।
এমনকি পোশাক ফরেন্সিক পরীক্ষা করার পাশাপাশি গোপন জবানবন্দির দিক থেকেও এড়িয়ে যাচ্ছেন নির্যাতিতা। আর সেটাকেই অস্ত্র রূপে গ্রহণ করলেন অভিযুক্তের আইনজীবী।
মিলল জামিন
জি ২৪ ঘণ্টা-র রিপোর্ট মোতাবেক, গতকাল শনিবার ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত শেষে ধৃতকে আদালতে পেশ করা হলে অভিযুক্তের আইনজীবী সুব্রত সর্দার বিচারকের কাছে দাবি জানান যে, এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, মেডিকো-লিগাল পরীক্ষাও হয়নি। যেখানে ধর্ষণের মতো সংবেদনশীল মামলায় এই দু’টি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ধর্ষণের অভিযোগ জানার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকো-লিগাল পরীক্ষা হওয়া জরুরি। কিন্তু এক্ষেত্রে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। অন্যদিকে আদালতে অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করে ধৃত ছাত্রের জেল হেফাজতের দাবি জানান সরকারি আইনজীবী।
বেঁধে দেওয়া হল একাধিক শর্ত
শেষে দুই পক্ষের যুক্তি এবং আবেদন শোনার পর বিচারক জোকা আইআইএম ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত পড়ুয়াকে ৫০ হাজার টাকার বন্ডে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিল আলিপুর পুলিশ আদালত। যার মধ্যে ২৫,০০০ টাকা নগদ এবং ২৫,০০০ টাকা ব্যক্তিগত বন্ড হিসেবে জমা দিতে হবে। তবে এই জামিনের পাশাপাশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক শর্ত আরোপ করা হয়েছে। আর সেই শর্তগুলি হল, পুলিশের কাছে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।
এছাড়াও কোনো কারণে রাজ্য ছাড়তে গেলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। যখনই তদন্তের স্বার্থে ডাকা হবে তখনই যেন হাজিরা দেয়। সবসময় তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে। এবং অভিযোগকারিনীর উপর কোনও রকম প্রভাব বিস্তার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: একুশে জুলাইয়ের আগেই বীরভূমে খুন তৃণমূল নেতা!
উল্লেখ্য জোকা IIM কলেজের ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার বাবা এক চমকপ্রদ বয়ান দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছেন যে, ধর্ষণই নাকি হয়নি। এছাড়াও তিনি বলেন, “আমি জানতে পারি মেয়ে SSKM নিউরোলজিস্ট ডিপার্টমেন্টে রয়েছে। মেয়েকে হরিদেবপুর থানা পুলিস উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। এরপর মেয়ে বাড়িতে ফেরার পর তার বাবাকে জানায়, আমার সঙ্গে ধর্ষণের মতো এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি বা শারীরিক নির্যাতন করেনি।” তবে গোটা ঘটনার শেষ পরিণতি ঠিক কী হবে তা জানার অপেক্ষায় রয়েছে সকলে।