বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বিশ্বের বৃহত্তম নদী বাঁধ তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে চিন। তাও আবার ভারত সীমান্তের গা ঘেঁষে! হ্যাঁ, শনিবার সেই খবর আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করেছে বেইজিং। এ প্রসঙ্গে, চিনের সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া তাদের রিপোর্টে স্পষ্ট জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী লি কুয়াং শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইয়ার্লুং সাংপো নদ বা ব্রহ্মপুত্রের নিম্ন উপত্যকায় বাঁধ নির্মাণের সূচনা করেন।
ভারতের আপত্তি উড়িয়ে বাঁধ তৈরি করছে চিন!
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বারবার ভারতের তরফে আপত্তি জানানো সত্বেও 2015 সাল থেকে ধাপে ধাপে ব্রহ্মপুত্র নদীতে বাঁধ নির্মাণের কাজ চালিয়ে গিয়েছে চিন। বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, চিনের এই বাঁধ নির্মাণের কারণে দিন দিন জলস্তর কমছে। এর ফলে আগামী দিনে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, অসম সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে তীব্র জল সঙ্কট দিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে, অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু জানান, তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের ওপর যে বাঁধ তৈরি করছে চিন, তাতে আগামী দিনে ভারতের উদ্বেগ বাড়বে বই কমবে না! ওই বাদ আমাদের কাছে বোমার মতোই ভয়ঙ্কর! যদিও এই সব দাবি উড়িয়ে ভারতের আপত্তিকে দূরে সরিয়ে রেখে, তিব্বতের ইয়ার্লুং সাংপো নদ অর্থাৎ অরুনাচলে যা সিয়ান নামে পরিচিত সেই সিয়াংয়ের নিম্নাংশ অর্থাৎ ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ নির্মাণের কাজ জোর কদমে চালাচ্ছে বেইজিং।
অবশ্যই পড়ুন: প্রশান্ত মহাসাগরে শক্তি বৃদ্ধিই লক্ষ্য, লাক্ষাদ্বীপে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়ছে ভারত
বাঁধ তৈরিতে চিনের বড় বিনিয়োগ
চিনা সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী লি-র হাত ধরে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রহ্মপুত্রের ওপর বাঁধ তৈরির যে সূচনা হয়েছে তাতে কম করে 1.2 ট্রিলিয়ন ইউয়ান ভারতীয় মুদ্রায় 14.4 লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে বেইজিংয়ের। তবে এই বিপুল অর্থ খরচ করেই ব্রহ্মপুত্রের জলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে ড্রাগন। যা আদতে ভারতের জন্য উদ্বেগের।
তবে চিনের এমন পদক্ষেপে শুধু যে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হবে তেমনটা নয়, ক্ষতির তালিকায় নাম রয়েছে বাংলাদেশেরও। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, বাঁধ তৈরির মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্রের জলে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনবে চিন। আর সেই সূত্রেই, নদীর জলকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করবে জিনপিংয়ের দেশ।