মালদ্বীপে বন্দে মাতরম স্লোগান! হঠাৎ কেন ভারতের সাথে সম্পর্ক ঠিক করতে চাইছেন মইজ্জু?

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বিগত বছরগুলিতে ভারত-মালদ্বীপ সম্পর্ক একেবারে ভিন্ন খাতে বয়ে যায়। আজ থেকে দু বছর আগেও মালদ্বীপ জুড়ে গমগম করছিল ইন্ডিয়া আউট স্লোগান। ভারতের উপস্থিতির বিরোধিতা করেছিলেন মালদ্বীপের বিরোধীরা। তবে সেই তিক্ততা মিটেছে। দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষ করে এবার মালদ্বীপের সাথে সখ্যতা আরও গভীর করতে চায় ভারত। নিজের স্বার্থ বুঝে ওই একই পথে হাঁটতে চাইছে দ্বীপরাষ্ট্রটিও।

সেই মতোই, এবার ব্রিটেন সফর শেষ করে মালদ্বীপে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার সকালে মালদ্বীপের বিমানবন্দরে ল্যান্ড করল প্রধানমন্ত্রী বিমান। এদিন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে নিজেই বিমানবন্দরে হাজির হন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মইজ্জু। একে অপরের উষ্ণ আলিঙ্গনে মালদ্বীপ জুড়ে ভেসে ওঠে, বন্দেমাতরম ও ভারত মাতা কি জয় স্লোগান। আর এসবের মাঝেই কপালে চিন্তার ভাঁজ কিছুটা বেড়েছে চিনের!

সব বুঝেই ভারতের সাথে সম্পর্ক গভীর করতে চাইছে মালদ্বীপ!

গত দুবছর যে মালদ্বীপে ভারত বিরোধী স্লোগান উঠতো, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদধূলি পড়ায় সেই মালদ্বীপের জনতাই বলে উঠলো ভারত মাতা কি জয়। তাই প্রশ্ন উঠছে, ভারতের বিরোধিতা করা মালদ্বীপ কেন হঠাৎ ভারতের গুণগান গাইতে লাগলো? আসলে বিগত বছরগুলিতে মালদ্বীপের সাথে তিক্ততা বাড়লেও আদতে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সব রকম সহযোগিতা করে গিয়েছে ভারত।

একাধিক রিপোর্ট ঘেঁটে জানা গেল, গত দু বছরে ভারতের বিরুদ্ধাচারণ করা সত্ত্বেও মালদ্বীপের অর্থনৈতিকে শক্তিশালী করতে সব রকম সাহায্য করেছে দিল্লি। যার মধ্যে রয়েছে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে মালদ্বীপকে 400 মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ 3,320 কোটি টাকার অর্থ সাহায্য, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের তরফে 100 মিলিয়ন ডলারের ট্রেজারি বন্ড সাবস্ক্রিপশনও।

আসলে বিগত দিনগুলিতে মালদ্বীপ পুরোপুরি বুঝতে পেরেছে, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে ভারত ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনও দেশ তাদের এত সাহায্য করবে না। আসলে ভারতই যে তাদের একমাত্র বিশ্বস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার তা হারে হারে বুঝতে পেরেছেন প্রেসিডেন্ট মইজ্জু। মূলত সেই কারণে, ভারত মহাসাগরের বাণিজ্য থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে ফের গলায় টেনে নিয়েছে মালদ্বীপ। যার অন্যতম প্রমাণ উদাহরণ প্রধানমন্ত্রী মোদির আগমনে মালদ্বীপের মাটিতে ভেসে ওঠা বন্দে মাতরম ও ভারত মাতা কি জয় স্লোগান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে আর্থিক সহযোগিতা সহ অন্যান্য সমস্ত দিক মাথায় রেখে ইন্ডিয়া আউট আন্দোলন থেকে শুরু করে ভারতের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ এবং নিরাপত্তা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগের পরও বিরোধিতার রাস্তা থেকে সরে এসে ভারতের সাথে সুসম্পর্ক গড়তে চাইছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। বিশ্লেষকদের মতে, মালদ্বীপের সাথে ভারতের ভারতের সম্পর্কের উন্নতি হওয়ায় কিছুটা হলেও চিন্তায় পড়বে ড্রাগনের দেশ!

 

অবশ্যই পড়ুন: নামিদামী দলের প্রস্তাব সত্বেও কেন মোহনবাগানেই যোগ দিলেন অভিষেক সিং? কারণ জানালেন নিজেই

প্রসঙ্গত, শুক্রবার ব্রিটেন সফর শেষ করে মালদ্বীপে পাড়ি জমিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আপাতত যা খবর, 25 এবং 26 জুলাই, এই দুদিন মালদ্বীপে থাকবেন তিনি। জানা যায়, দেশটির 60তম জাতীয় দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। নিয়ম মেনেই সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, দুদিনের মালদ্বীপ সফরে ভারত-মালদ্বীপের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মইজ্জুর সাথে বৈঠকের পাশাপাশি ভারতের সাহায্যে ওদেশে গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রকল্পগুলিও উদ্বোধন করার কথা রয়েছে মোদির।

Leave a Comment