প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। বাকি আছে মাত্র আর কয়েক মাস। আর এই কয়েক মাসে তাই ইতিমধ্যেই উঠে পড়ে লেগেছে রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু বিগত কয়েকদিন ধরে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর একের পর এক হেনস্তার ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রুজি-রুটির সন্ধানে বেরনো এই শ্রমিকেরা যেখানে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে তাঁরা আজ নানা ভাবে নিগৃহীত, অবহেলিত। তাই এবার তাদের ফিরিয়ে আনা নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বড় বার্তা মমতার
আজ অর্থাৎ সোমবার, ২৮ জুলাই, বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে একটি প্রশাসনিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি ভিন রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের ওপর জাতিগত বিদ্বেষ নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন। তিনি বলেন, “বাইরের রাজ্যে আমাদের ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। তাঁরা প্রতিদিন অপমানিত হচ্ছেন নানাভাবে। বাংলার লোকজনকে রীতিমত রাস্তায় মারধর করা হচ্ছে। এবার তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে আনুন। বাংলার মাটিতেই কাজের সুযোগ করে দেব।”
তালিকা তৈরি করার নির্দেশ
এদিন বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, শীঘ্রই সব জেলা শাসকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তালিকার মাধ্যমে শ্রমিকদের ফেরানোর রূপরেখা তৈরি করতে হবে। আর সেই তালিকার ভিত্তিতে কোন জেলায় কতজন পরিযায়ী রয়েছেন, তাঁরা কোথায় কাজ করছেন, কী অবস্থায় আছেন সব তথ্য জোগাড় করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রতিহিংসা থেকেই এমন! ভাইরাল ভিডিও নিয়ে পাল্টা যুক্তি সাহেব ভট্টাচার্যর
জব কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত মমতার
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলার প্রায় ২২ লক্ষ মানুষ দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। মূলত মহারাষ্ট্র, গুজরাত, কেরল, দিল্লি, তামিলনাড়ু, পঞ্জাব ও রাজস্থান— এই রাজ্যগুলিতেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় কাজ করেন বাংলার শ্রমিকরা। তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন যে, ”দরকার নেই দালালদের সাহায্য নিয়ে বাইরে গিয়ে কাজ করার। আপনারা ফিরে এলে এখানে যদি থাকার জায়গা থাকে, তাহলে তো ভালো। আর তা না থাকলে, আমরা ক্যাম্প বানিয়ে দেব।” এমনকি তিনি রেশন কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, কর্মশ্রী প্রকল্পে কাজের ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন। দরকার পড়লে জব কার্ড দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।