প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চলতি বছরের শুরুতে অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই সময় কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন গঠনের বিষয়ে খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। তবে সম্প্রতি এই নতুন বেতন কমিশন নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আপডেট সামনে এসেছে। লোকসভায় একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে নতুন বেতন কমিশন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে, যা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। পাশাপাশি কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইক্যুইটিজ এই কমিশন সংক্রান্ত এক নজরকাড়া রিপোর্ট সামনে তুলে ধরেছে।
অষ্টম বেতন কমিশন নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন
Money Control -এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি লোকসভায় কেন্দ্রীয় কর্মীদের অষ্টম বেতন কমিশন নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে একাধিক প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছিল। বলা হয়েছিল কবে অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের নিয়োগ কবে করা হবে এবং তাদের কাজের শর্তাবলীই বা কী হতে চলেছে? শুধু তাই নয় এও প্রশ্ন করা হয়েছিল যে সংশোধিত বেতন কাঠামো কবে থেকে কার্যকর করা হবে? সেই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে অষ্টম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ঠিকই কিন্তু এখনও এই বিষয় নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, এবং কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ বিভাগ সহ সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির থেকেও মতামত বাকি রয়েছে। অর্থাৎ এর থেকে স্পষ্ট যে বাস্তবায়নের দিক থেকে এখনও অনেক পথ বাকি।
কবে চালু হতে চলেছে এই কমিশন?
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরেই চেয়ারম্যান নিয়োগ করবে। পাশাপাশি বেতন কমিশন তাদের সুপারিশ জমা দেওয়ার পর এবং সরকার তা গ্রহণ করার পরেই সংশোধিত বেতন কাঠামো কার্যকর করা হবে। এমতাবস্থায়, কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইক্যুইটিজ একটি প্রতিবেদনে অষ্টম বেতন কমিশন চালু হওয়ার এক পূর্বাভাস দিয়েছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী অষ্টম বেতন কমিশন ২০২৬ সালের শেষ অথবা ২০২৭ সালের শুরুতে কার্যকর হতে পারে।
যদিও এর আগে পূর্ববর্তী ষষ্ঠ এবং সপ্তম বেতন কমিশন গঠনের পর রিপোর্ট দিতে কেন্দ্রের সময় নিয়েছিল প্রায় দেড় বছর। তারপর আবার মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেতে এবং তা বাস্তবায়িত হতে কেন্দ্রের আরও ৩ থেকে ৯ মাস সময় লেগেছিল। সেই হিসেবে এবারও পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে কমপক্ষে ১৮ থেকে ২৪ মাস সময় লাগবে।
মূল বেতনের উপর কতটা প্রভাব পড়বে?
এদিন কোটাকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই নয়া অষ্টম বেতন কমিশনে ফ্যাক্টর ১.৮ নির্ধারিত হতে পারে। যার ফলে ন্যূনতম মূল বেতন ১৮,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০,০০০ টাকা হতে পারে। যার দরুন এই অষ্টম বেতন কমিশনের প্রভাব পড়বে প্রায় ৩৩ লক্ষ কেন্দ্রীয় কর্মচারীর উপর। যার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই গ্রেড সি স্তরের কর্মীরা সুবিধা পাবে।
আরও পড়ুন: ‘এদের বোঝান, নাহলে …’ লোকসভায় মেজাজ হারালেন অমিত শাহ, দিলেন হুঁশিয়ারিও
বেতন বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে ব্যয়ের চাপ
কেন্দ্রের এই নয়া অষ্টম বেতন কমিশনের ক্ষেত্রে কোটাকের রিপোর্টে উঠে এসেছে ব্যয়ের চাপ এবং চাহিদা বৃদ্ধির কথা। যেখানে বলা হয়েছে যে অষ্টম বেতন কমিশনের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে দেশের মোট জিডিপির ০.৬ থেকে ০.৮ শতাংশ। অর্থাৎ টাকার অঙ্কে এই ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২.৪ থেকে ৩.২ লক্ষ কোটি টাকা।
তবে অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কোটাক জানিয়েছে, বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধির ফলে অস্থায়ীভাবে ভোগব্যয়ের হার সমান হারে বেড়ে যায়। বিশেষ করে অটোমোবাইল, কনজিউমার স্ট্যাপলস, ইলেকট্রনিক্স, এফএমসিজি প্রভৃতি খাতে চাহিদা বাড়ে। সেক্ষেত্রে এই কমিশনেও তাই হতে পারে।