গত বছরের থেকে ১০০ কোটি বেশি! এবার পুজোর অনুদানে কত খরচ করছে রাজ্য সরকার?

durga pujo mamata banerjee

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: মা দুর্গার আগমনে আর বাকি মাত্র কয়েকটা দিন, আগামী মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই শুরু হতে চলেছে শারদোৎসব। তাই ইতিমধ্যেই জোরকদমে পুজো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কমিটিগুলি। এমতাবস্থায় ক্লাবগুলির জন্য এক বড় চমক আনল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বিভিন্ন পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে চলতি বছরের পুজো অনুদান ঘোষণা করলেন।

পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান ঘোষণা!

গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের প্রশাসনিক শীর্ষকর্তারা, কলকাতা পুরসভা, দমকল বিভাগ, CESC, পুলিশ প্রশাসন, পরিবহণ ও স্বাস্থ্য দফতরের মতো পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠক করেছিলেন। গত বছর পুজো কমিটিগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন যে, এবছর ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। তবে বাস্তবে তার চেয়েও ১০ হাজার টাকা বেশি দিলেন তিনি। অর্থাৎ বর্তমানে পুজো ক্লাবগুলির মোট অনুদানের পরিমাণ হতে চলেছে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। এছাড়াও বিদ্যুতের মাসুলেও ৮০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার জন্য CESC এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদকে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

সরকারি খাতে বাড়ল বিপুল খরচ

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে এক সাংস্কৃতিক আবহ তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি অনুদান থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে উন্নত ব্যবস্থা কোনো কিছুতেই বাদ দেন না। পুজোর সময়ও বেশ নজরদারি বাড়ানো হয়। ২০১৮ সাল থেকে শুরু হয় অনুদান পর্ব। এবারও যাতে তার অন্যথা না হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার সঙ্গে এক ধাক্কায় অনুদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই সরকারি খরচও বিপুল বেড়েছে। হিসেব কষে দেখা গিয়েছে প্রায় ৯০০ শতাংশ বেড়েছে অনুদানের অঙ্ক। আর তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুজো কমিটিগুলির সংখ্যাও।

বাড়ছে ক্লাবের সংখ্যা

প্রশাসনের তরফে দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালে, যে বছর থেকে মমতা সরকার অনুদান পর্ব শুরু করেছিলেন, সেবার ক্লাবের সংখ্যা ছিল ২৮,০০০। তখন ১০ হাজার করে দেওয়া হত। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে ক্লাবের সংখ্যা একলাফে বেড়ে হয় ৪০,০০০। তখন ফের অনুদান বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ হাজার। ২০২০ তে সেই অনুদান ফের বেড়ে হয় ৫০ হাজারে, ২০২১ এও একই অনুদান ধার্য করা হয়। এরপর ২০২২, ২০২৩ এবং ২০২৪ এ অনুদান যথাক্রমে ৬০, ৭০ এবং ৮৫ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়। সেখান থেকে এবার অর্থাৎ ২০২৫ এ অনুদানের অঙ্ক দাঁড়ায় ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। অন্যদিকে বর্তমানে ক্লাবের সংখ্যাও হয়েছে ৪৩,০০০ এ।

আরও পড়ুন: ‘আমাদের চাকর ভাবছেন নাকি!’ মমতার হুঁশিয়ারির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন BLO-রা

দিনের পর দিন ক্লাবের সংখ্যা এবং অনুদানের পরিমাণ বাড়তে থাকায় রাজ্যের কোষাগারে খরচ হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে। যদি মোট ক্লাবের পরিমাণ ৪৩ হাজার ধরে নেওয়া যায়, তাহলে এবার অনুদানে রাজ্যের খরচ হচ্ছে ৪৭৩ কোটি টাকা। গত বছর যেখানে খরচ ছিল ৩৬৫.৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ অন্তত ১০০ কোটি টাকা খরচ বাড়তে চলেছে এই বছর। তার উপর এবছর ৮০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

Leave a Comment