বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: 15 আগস্টের আগেই বাংলায় পালিত হয়ে গেল স্বাধীনতা দিবস। হঠাৎ মধ্যরাতে কোচবিহারের দিনহাটায় উঠল জয় হিন্দ, বন্দেমাতরম ধ্বনি। স্থানীয়রা সকলে একযোগে মিলে পালন করলেন স্বাধীনতা দিবস। চিত্রটা বৃহস্পতিবার রাত 12টার। এদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে জয় হিন্দ ও বন্দেমাতরম ধ্বনিতে নতুন করে স্বাধীনতাকে উদযাপন করলেন কোচবিহারের দিনহাটার মশালডাঙা ও পোয়াতুর কুঠি ছিটমহলের বাসিন্দারা।
হঠাৎ কেন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলেন গ্রামবাসী?
সালটা 2015। সে বছর, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় হয়। দীর্ঘ বহু বছর ধরে কোচবিহারের ওই জায়গাগুলি ছিল রাষ্ট্রহীন অর্থাৎ ভারতের আওতার বাইরে! তবে পরবর্তীতে ছিটমহল বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে ওই অঞ্চলের অন্তত 50 হাজার মানুষ পূর্ণ নাগরিকত্ব, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সহ ভোটাধিকার পেয়েছিলেন।
ইচ্ছেমতো নাগরিকত্ব বেছে নেওয়ার সুবাদে একে একে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও অধিকারবোধ জন্মায় ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের। ধীরে ধীরে সমস্ত ক্ষেত্রেই স্বীকৃতি পেতে শুরু করেন ছিটমহল অঞ্চলগুলির বাসিন্দারা। মূলত সেই স্বীকৃতিকে ঘিরেই উৎসবের মেজাজে মেতে ওঠেন কোচবিহারের দিনহাটার মশালডাঙা ও পোয়াতুর কুটির ছিটমহলের স্থানীয়রা। পালিত হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অবশ্যই পড়ুন: জিম করতে গিয়েই হার্ট অ্যাটাক! ২২ বছরের তরুণ ক্রিকেটারকে হারাল বাংলা
বলা বাহুল্য, 2015 সালে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে 111টি ছিটমহল বিনিময় হয়। যার মধ্যে 51টি ছিটমহল ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। যা ছিল ভারতের জন্য বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য। মূলত, 31 জুলাইয়ের রাতে বাংলাদেশ থেকে 51টি ছিটমহলকে আইনতভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার পরই ওই অঞ্চলগুলির মানুষ ধীরে ধীরে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভোটাধিকার ও পূর্ণ নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পেতে থাকেন।
মূলত সেই কারণেই, 31 জুলাই মধ্যরাতে মশালডাঙা ও পোয়াতুর কুঠির মাটিতে উৎসব হয়, আনন্দে গা ভাসান স্থানীয়রা। আর সেই সূত্র ধরেই 2015 দলের পর চলতি বছর 11তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলেন মশালডাঙা ও পতুয়ারকুঠি ছিটমহলের বাসিন্দারা। আদতে, এই উৎসব তাদের প্রাণের উৎসব। এ প্রসঙ্গে তাঁদের প্রায় সকলেরই বক্তব্য, এই দিন আমাদের কাছে গর্বের। এটা আমাদের দ্বিতীয় জন্মদিন। ( সোর্স: স্থানীয় সংবাদমাধ্যম )