সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের ব্যবসার উপর একের পর এক কোপ বসাচ্ছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হ্যাঁ, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর এবার 25% শুল্ক (Trump Tariff Policy) চাপানোর পথে হেঁটেছে ট্রাম্প, যা আগামী 7 আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। আর এতে সবথেকে বড় ধাক্কা খেতে পারে গুজরাটের মোরবির বিশ্ববিখ্যাত সেরামিক টাইলস শিল্প। কিন্তু কেন?
বলে দিই, মোরবি ভারতের সেরামিক শিল্পের রাজধানী হিসেবেই পরিচিত। আর এখান থেকে প্রতি মাসে প্রায় 1400 থেকে 1500 কনটেইনার টাইলস আমেরিকায় রপ্তানি হয়, যার বাজার মূল্য বছরে দাঁড়ায় প্রায় 1500 কোটি টাকা। তবে আমেরিকার নতুন শুল্কনীতির ফলে এই বিরাট রপ্তানির বাজারে একেবারে ধস নেমে এসেছে।
দেশের বাজারে শুল্কনীতির প্রভাব
বর্তমান সময়ে মোরবি টাইলস আমদানিতে আমেরিকা 12% শুল্ক আদায় করে। আর এর মধ্যে 9% আমদানি শুল্ক, আর 3% অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি। তবে গত তিন মাস ধরে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত 10% শুল্ক। ফলে মোট শুল্ক এখন দাঁড়িয়েছে 22%।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার অতিরিক্ত 25% শুল্ক আরোপ হবে। আর এর ফলে মোট শুল্ক দাঁড়াবে 37%। ফলে মোরবির সেরামিক পণ্যের দাম আমেরিকায় যে কয়েকগুণ বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকি সরাসরি ভারতের ব্যবসায়ীদের চাহিদার উপর এর প্রভাব বর্তাবে।
মুখ থুবড়ে পড়ছে দেশের ব্যবসা
Zee News-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এদিকে নতুন শুল্ক ঘোষণার পর থেকেই মোরবির বহু সেরামিক রপ্তানিকারক জানিয়েছেন যে, আমেরিকার ক্রেতারা তাদের অর্ডার বাতিল করে দিচ্ছে। এমনকি অনেক চালান রওনা দেওয়ার আগেই তা স্টপ করে দেওয়া হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে উৎপাদন বন্ধের চিন্তাভাবনা করছে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপতিরা।
এদিকে বিশ্ববাজারে টাইলস রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের তুলনায় অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে আমেরিকা অনেক কম হারে শুল্ক ধার্য করেছে। কারণ তুরস্কে মাত্র 10%, ইতালি ও স্পেনে 15% এবং ভিয়েতনামের মাত্র 20% শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে তুলনামূলকভাবে এই দেশগুলির পণ্য এখন আমেরিকায় অনেকটাই সস্তাতে বিক্রি হবে। আর সে জন্যই আমেরিকার আমদানির ক্ষেত্রে এখন ভারতের পরিবর্তে এই দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে।
আরও পড়ুনঃ AC লোকাল চালু হওয়ার আগে রাণাঘাটের জন্য বড় ঘোষণা রেলের, তৈরি হবে থার্ড লাইন
এখন ভারতীয় রপ্তানি সংস্থাগুলি দাবি করছে, কেন্দ্র সরকার যদি বিষয়টিকে কূটনৈতিক স্তরে দাঁড়িয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা না করে, তাহলে ভারতের শিল্প খাত ও ব্যবসায়িক খাত একেবারে মুখ থুবড়ে পড়বে। পাশাপাশি বিকল্প বাজার হিসাবে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকেও নজর দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এখন দেখার ভবিষ্যতে কী হয়।