বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মৃত্যু কি আর বলে কয়ে আসে? ইয়েমেন উপকূলে শরণার্থী বোঝাই নৌকা ডুবে অন্তত 64 জনের মৃত্যু হয়েছে বলেই খবর। দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হয়েছেন কমপক্ষে 74 জন। সোমবার ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের অভিবাসন সংস্থা।
এখনও চলছে উদ্ধার কাজ
রাষ্ট্রসঙ্ঘের অভিবাসন সংস্থা সূত্রে খবর, ইয়েমেনের দক্ষিণ অংশ অর্থাৎ আবিয়ানের কাছেই অ্যাডেন উপসাগরে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, নৌকাডুবির খবর পেতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় উদ্ধারকারী দল।
এ প্রসঙ্গে ইয়েমেনের ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য অধিকর্তা আব্দুল কাদের বাজামাল জানিয়েছিলেন, দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ উদ্ধারকাজ চললেও মাত্র 10 জনকেই উদ্ধার করা গিয়েছিল। তাদের মধ্যে 9 জন ছিলেন ইথিওপিয়ার এবং একজন ছিলেন ইয়েমেনের নাগরিক।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান চালিয়েও 10 জনের বেশি কাউকেই উদ্ধার করা যায়নি। রিপোর্ট অনুযায়ী, গভীর রাত পর্যন্ত চলেছিল তল্লাশি অভিযান, কিন্তু তাতেও লাভের লাভ হয়নি। জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনাকালে ওই নৌকায় মোট 154 জন যাত্রী ছিলেন। কাজেই, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কায় এখনও চলছে উদ্ধার কাজ।
নিরাপদ জীবনের সন্ধানেই বাড়ছে মৃত্যু!
হর্ন অফ আফ্রিকা এবং ইয়েমেনের মধ্যবর্তী ওই সমুদ্র পথ ধরে নিরাপদ জীবন ও কর্মসংস্থানের সন্ধানে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ ইথিওপিয়া এবং সোমালিয়া থেকে ইয়েমেনে আসেন। ওই পথ দিয়েই ইয়েমেন হয়ে সৌদি আরব সহ অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলিতে কাজের সূত্রে পৌঁছে যান তাঁরা।
অবশ্যই পড়ুন: অভাবের সাথে লড়তে থাকা জেদ নিয়েই ভারতীয় ফুটবল দলে, জাত চেনাতে মুখিয়ে হাবড়ার সাহিল
তবে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বলছে, কর্মসংস্থানের খোঁজে ইয়েমেন হয়ে সৌদি আরব ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশে পৌঁছানোর যে পথ, সেই সমুদ্র পথটি আসলে বিপজ্জনক। পরিসংখ্যান বলছে, 2023 সালে এই মারণ সমুদ্র পথ ধরে ইয়েমেনে পৌঁছেছিলেন 97,200 জন। তবে পরের বছর অর্থাৎ 2024 সালে সংখ্যাটা কমে 60 হাজারে দাঁড়ায়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার বিবৃতি অনুযায়ী, শুধুমাত্র গত বছর ওই মরণ সমুদ্রপথ হয়ে কাজের সন্ধানে ইয়েমেনে আসতে গিয়ে 2,082 জন নিখোঁজ হয়ে যান। আজ পর্যন্ত তাঁদের কোনও হদিস মেলেনি। বলা বাহুল্য, 2024 সালে ওই সমুদ্র পথে যাত্রা করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল 558 জনের। চলতি বছরেও সেই ছবিই ধরা পড়ল।