সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দিনের পর দিন ভারত-আমেরিকার সম্পর্কে ভাটা পড়ছে। নেপথ্যে কারণ ভারতের উপর ট্রাম্পের (Donald Trump) 25% অতিরিক্ত শুল্ক। তবে তারই মধ্যে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য আগুনে আরো ঘি ঢালছে। আবার অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন ডেপুটি চিপ ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতা স্টিফেন মিলারের বিস্ফোরক মন্তব্যে গোটা আন্তর্জাতিক মহলের হাওয়া গরম। কী এমন বললেন তিনি?
ভারতের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মিলারের
সম্প্রতি সানডে মর্নিং ফিউচারস নামের এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার স্টিফেন মিলার সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে, ভারত ও চিন একজোট হয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনকে ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করছে। তিনি বলেছেন, মানুষ জানলে অবাক হবে যে ভারত ও চিন যৌথভাবেই রাশিয়ার থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কিনছে। আর সে কারণেই ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চালাতে পারছে পুতিন।
মিলারের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে চরম বিতর্ক আন্তর্জাতিক মহলে। এমনকি তাঁর এই মন্তব্য এমন সময় করা হয়েছে, যখন ভারতের উপর ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে শুল্ক চাপিয়েছে। হ্যাঁ, বাংলাদেশের থেকেও বেশি হারে শুল্ক ধার্য করা হয়েছে ভারতের উপর। ফলে এ নিয়ে যে বিতর্কের দানা বাঁধবে, তা বলার অপেক্ষা ছিল না।
রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধের হুঁশিয়ারি
স্টিফেন মিলার জানিয়েছে, ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় ভারতের কাছে বার্তা পাঠিয়েছে যে, রাশিয়া থেকে অস্ত্র এবং খনিজ তেল কেনা বন্ধ করতে হবে। তার দাবি, এই কেনাকাটার ফলে সরাসরি রাশিয়া অর্থ পাচ্ছে, যার ফলে ইউক্রেনের যুদ্ধ চালানোর জন্য তারা আরো নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করতে পারছে।
এমনকি ট্রাম্প মন্তব্য করেছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে জোট বেঁধেই ভারত তার মৃতপ্রায় অর্থনীতিকে আরো খাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর এই কটাক্ষ আন্তর্জাতিক মহলে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। যদিও এই সমস্ত মন্তব্যের মাঝে মিলার সামান্য আশার আলো দেখিয়েছেন। তার কথায়, আমেরিকা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে চায়। তবে যুদ্ধের জন্য অর্থ সাহায্য করলে আমেরিকা কড়া পদক্ষেপ নেবে। তিনি এও বলেছেন, ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক আর অর্থনৈতিক, সমস্ত দিক থেকে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুনঃ আজ থেকে ১০ আগস্ট অবধি একাধিক ট্রেন বাতিল, নোটিশ জারি করল দক্ষিণ-পূর্ব রেল
যদিও ভারতের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধের কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। নয়াদিল্লির স্পষ্ট বার্তা, দেশের স্বার্থই আমাদের কাছে সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, ভারতের জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় কম দামে জ্বালানি সরবরাহ করা সবথেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তার জন্যই রাশিয়ার মতো বিকল্প দেশকে উৎস হিসেবে ব্যবহার করছে ভারত। (Source- Sunday Morning Futures)