ট্রেনে যেতে যেতে করেছেন পড়াশোনা, আজ Microsoft-র উঁচু পদে এই বাঙালি মেয়ে

ankita dey microsoft

সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ বাঙালির অভিধানে ‘অসম্ভব’ বলে কোনও বস্তু নেই। এই কথাটা যেন আবারও প্রমাণ করলেন বাঙালি মেয়ে অঙ্কিতা দে। আত্মবিশ্বাস এবং সাহস থাকলে একজন ব্যক্তি সবচেয়ে বড় লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন, তা প্রমাণ করেছেন IIT তে ভর্তি হওয়া অঙ্কিতা দে। আজ অঙ্কিতা এমন একটি চাকরি করছেন যা অনেকের কাছে স্বপ্নের কাজ। তিনি চাকরি করছেন Microsoft কোম্পানির উঁচু পদে। আজকের এই আর্টিকেলে এই বাঙালি মেয়ের সাফল্যের গল্প তুলে ধরা হবে।

অঙ্কিতা দে-র সাফল্যের কাহিনী

অঙ্কিতা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত এবং বিশ্বের অন্যতম নামীদামী কোম্পানি মাইক্রোসফটে কর্মরত। কিন্তু IIT-তে তার যাত্রা এত সহজ ছিল না। চাকরির পাশাপাশি তিনি পড়াশোনাও চালিয়ে যান। জানলে অবাক হবেন, ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে দাঁড়িয়েও অঙ্কিতা পড়াশোনা করেছেন। নিজের স্বপ্ন, লক্ষ্যের সামনে কোনও কিছুকেই বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেননি অঙ্কিতা। অঙ্কিতা দে মূলত পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। অঙ্কিতা ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিল।

অঙ্কিতা ডগলাস মেমোরিয়াল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করেছেন। দশম শ্রেণিতে তিনি ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। যেখানে দ্বাদশ শ্রেণিতে তিনি ৯২.৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। এরপর তিনি একাডেমি অফ টেকনোলজি থেকে ইসিই শাখায় বি.টেক করেছেন।

GATE-তে AIR 312 র‍্যাঙ্ক পান

অঙ্কিতার স্বপ্ন ছিল আইআইটিতে পৌঁছানো। তাই স্নাতক শেষ করার পর, তিনি এমটেক কোর্সের জন্য আইআইটিকে লক্ষ্য করেছিলেন। অঙ্কিতা ২০২০ সালে GATE পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি AIR 312 (GATE CS 2020 312 AIR) অর্জন করেন । GATE পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর, অঙ্কিতা আইআইটি কানপুরে পৌঁছান। এখান থেকে তিনি সিএস শাখায় এমটেক ডিগ্রি অর্জন করেন। আইআইটিতে অধ্যয়নকালে, অঙ্কিতা তার একাডেমিক পারফরম্যান্সের জন্য একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি মাইক্রোসফ্টে এসডিই বা সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত।

ট্রেনে দাঁড়িয়ে পড়াশোনা করতেন

অঙ্কিতা পুরনো দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, অনেক সময় ট্রেনে সিট পেতেন না, তাই দাঁড়িয়েই পড়াশোনা করতেন। অঙ্কিতা বলেন, ‘আমার আর কোনও উপায় ছিল না, যেকোনো মূল্যে আমাকে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘পুরো প্রস্তুতির সময় ইন্টারনেট আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। ইন্টারনেট একটি দুর্দান্ত জিনিস। পরীক্ষার চাপ সামলানো খুব কঠিন। আমি অবসর সময়ে আমার বাবা-মা এবং বন্ধুদের সাথে কথা বলতাম।’

তিনি বলেন, প্রস্তুতির সময় কোনও ধরণের বিভ্রান্তি এড়াতে, আমি সকল ধরণের বিনোদন প্ল্যাটফর্মের সাবস্ক্রিপশন সরিয়ে দিয়েছি। তিনি GATE পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীদের যতটা সম্ভব মক টেস্ট দেওয়ার পরামর্শ দেন।

Leave a Comment