মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে কমিশন! আধিকারিক সাসপেন্ড নিয়ে সংঘাত চরমে

Election Commission

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২৬ এর নির্বাচন শুরু হতে এখনো বাকি বেশ কয়েক মাস, আর তার মাঝেই রাজ্য সরকারের চার জন আধিকারিককে সাসপেন্ডের নির্দেশ নিয়ে কার্যত সংঘাতের পথে হাঁটছে নবান্ন এবং নির্বাচন কমিশন৷ যদিও কমিশনের নির্দেশ মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী৷ নির্বাচন ঘোষণা না হওয়া সত্ত্বেও কী করে কমিশন রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশ দিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিকে রাজ্যের ওই চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা দ্রুত জানানোর নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। সেক্ষেত্রে যথাযোগ্য ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধেও হতে চলেছে কড়া পদক্ষেপ।

ঠিক কী হয়েছিল?

আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভুয়ো ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় তুলে দেওয়ার অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় নির্বাচনের কাজে যুক্ত চার জন সরকারি আধিকারিককে সাসপেন্ড করার জন্য গতকালই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন৷ শুধু তাই নয়, ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পুলিশে FIR দায়েরের জন্যও রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়৷ যাঁদের মধ্যে দু’জন ERO এবং AERO। এদিকে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সরকার যে কমিশনের ওই সাসপেন্ডের নির্দেশ মানবে না, সে বার্তাও দিয়েছেন তিনি। আর তাতেই জল গড়াল অন্যদিকে।

ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রামের সভা থেকে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, ‘‘আমি কারও কোনও পানিশমেন্ট হতে দেব না। ২৬ এর নির্বাচন এখনও অনেক দেরি। তা সত্ত্বেও কমিশন অতিসক্রিয়। এখন থেকেই সাসপেন্ড করতে শুরু করেছে।” এমনকি এদিন তিনি নাম না করেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে ‘বিজেপির বন্ডেড লেবার বলেও কটাক্ষ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য রীতিমত আগুনে ঘি ঢালল। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরই নির্বাচন কমিশন মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি জানায়।

আরও পড়ুন: বাংলার মাটির তলায় লুকিয়ে ১.৪ লক্ষ কোটির অমূল্য রতন! রাজ্যকে জানাল কেন্দ্র

বিরাট চাপে মুখ্যসচিব

আধিকারিকদের সাসপেনশনের ঘটনায় কমিশনের এক আধিকারিক জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ওই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে কমিশনকে জবাব দিতে বাধ্য মুখ্যসচিব। অর্থাৎ কমিশনের নির্দেশে কতটা পালন করতে পক্ষপাতী, যদি সেই জবাব যথাযোগ্য মনে না হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে অথবা কোনও ব্যাখ্যা না পাওয়া যায়, তাহলে রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে কমিশনের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে WBCS (এক্সিকিউটিভ) অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। এবং কমিশনের ওই নির্দেশকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Leave a Comment