বাঙালি হেনস্থার অভিযোগের মধ্যেই হরিয়ানা পুলিশের উদ্যোগে ২২ বছর পর ঘরে ফিরল ছেলে

Haryana Police

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন রাজ্যে বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রেখে হেনস্তার অভিযোগ উঠে আসছে। যা নিয়ে বেশ সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ঘটনায় তীব্র খুব প্রকাশ করেছেন। যার দরুন জেলায় জেলায় ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছেন তিনি। যেখানে সকলেই ভিন্ন রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের উপর একের পর এক ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তার মাঝেই হরিয়ানার পুলিশের সৌজন্যে বাড়ি ফিরলেন ২২ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এক যুবক।

বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল রেজাউল

উত্তরবঙ্গ সংবাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৩ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি ছেড়ে চলে যান রেজাউল আলম। তারপর থেকে পরিবারের সকলে খোঁজ করলেও পাওয়া যায়নি তার হদিস। মাঝখানে কেটে গিয়েছে অনেক বছর। আর কোনরকম ভাবেই তাঁর সঙ্গে করা গেল না যোগাযোগ। কিন্তু সম্প্রতি হরিয়ানার ফরিদাবাদ জেলার নিট থানার পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে রেজাউলকে। বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় তিনি কিছুই দেখতে পারেননি। কারণ রেজাউল নাকি ভোটার কার্ড সহ বাকি পরিচয়পত্র সব হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু নথি না দেখলে ছাড়ছে না পুলিশ। শেষে রেজাউল ২২ বছর আগে যেই বাড়ি ছেড়ে সে বেরিয়ে এসেছিল তার ঠিকানা দেন।

হরিয়ানা পুলিশের সহায়তায় ফিরলেন বাড়ি

বহুবার জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে হরিয়ানা পুলিশের কাছে রেজাউল তাঁর কোচবিহারের মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের ঘোকসাডাঙ্গা থানা এলাকায় অন্তর্গত বাড়ির ঠিকানা দেন। এরপরই ঠিকানার প্রমাণপত্র যাচাইকরণের জন্য সেই ঠিকানা এবং তাঁর ছবি সহ ঘোকসাডাঙ্গা থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে হরিয়ানা পুলিশ। সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ঘোকসাডাঙ্গা থানার পুলিশ খোঁজ খবর নিয়ে হদিশ মেলে রেজাউলের পরিবারের সঙ্গে। ২২ বছর পর বাড়ির ছেলের খোঁজ পাওয়ায় পরিবার এক আত্মীয় তাঁর সঙ্গে থানায় গিয়ে রেজাউলের সঙ্গে দেখা করেন। শেষে সত্যতা যাচাই করে হরিয়ানা পুলিশ নিয়ম মেনে রেজাউলকে ফরিদাবাদে থাকা তাঁর আত্মীয়ের হাতে তুলে দেয়। ছোট ভাই কাদের আলি হরিয়ানায় গিয়ে গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ৫ আগস্ট দাদাকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন।

আরও পড়ুন: প্রথমে হামলা, এবার হুমকি! তৃণমূল নেতার অডিও ফাঁস করলেন শুভেন্দু অধিকারী

টানা ২২ বছর ধরে বাড়ি কেন ফেরেননি সেই প্রশ্ন রেজাউলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বাংলায় আসার বৈধ কাগজপত্র ছিল না তাঁর কাছে। তাই সে আসতে পারেনি। তাছাড়া পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না, তাই বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়নি। এদিকে, ২২ বছর পর রেজাউলের বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসছেন আত্মীয়স্বজনরাও। দাদাকে এত বছর পর ভাইরা কাছে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েছে এবং অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছে হরিয়ানা পুলিশকে।

Leave a Comment