না রেশন, না ভাতা, না ঘর! সমস্যা মিটল না ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ শিবিরেও

Amader Para Amader Samadha

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বয়সের ভারে ভেঙে গিয়েছ শরীর, ভাঙা ঘর, অসুস্থ সন্তান আর পেটে খিদে। এই বাস্তবতা নিয়ে এক ব্যক্তি মালদহের ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ ক্যাম্পে নীরবতা নামিয়ে আনল। হ্যাঁ, আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান (Amader Para Amader Samadhan) প্রকল্পের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কার্যত কেঁদে ফেলল 64 বছরের কলিমউদ্দিন নামের ওই ব্যক্তি। তবে তার সেই চোখের জল ছুঁল না প্রশাসনের হৃদয়।

TV-9 এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর ব্লকের তুলসীহাটা গ্রামের বাসিন্দা কলিমুদ্দিন। 15 বছর আগেই বৃষ্টিতে তার ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। স্ত্রী ও বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেকে নিয়েই কোনোমতে তার দিন কাটে। না আছে রেশন কার্ড, না আছে বার্ধক্য ভাতা, না আছে আবাস যোজনার ঘর। এমনকি লক্ষীর ভাণ্ডারের সহায়তাও মিলছে না। ভাতার টাকা না পেলে শাক-পাতা খেয়েই কাটে দিন। তবে সরকার কোনোদিনও মুখ ফিরে তাকায় না।

আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ক্যাম্পেও নেই সমাধান

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি চালু করা হয়েছে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ক্যাম্প। আর এদিন এই ক্যাম্প মালদহের রারিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বসেছিল। সেখানে উপস্থিত ছিল জেলা শাসক নিতিন সিংহানিয়া এবং পরিবহন দপ্তরের সচিব সৌমিত্র মোহন। লোকজন ভেবেছিল যে, উচ্চ মহলের আধিকারিকরা আছে, ফলে কিছুটা স্বস্তি মিলবে।

তবে বাস্তবে ঘটল উল্টোটা। কলিমুদ্দিন ও তার স্ত্রী বিডিও সৌমেন মন্ডলের সামনে তাদের কথা জানাতে গিয়েই অঝরে কেঁদে ফেলেছিলেন। অথচ বিডিও কার্যত কোনোরকম প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তাদের অনুরোধ একেবারে ধুলোয় উড়িয়ে দেন তিনি।

এই প্রশ্ন এখন তুলসীহাটা পঞ্চায়েতের প্রত্যেকটি মানুষের মুখে। প্রতিবেশীরা বলছে, কলিমুদ্দিন সাহেব সত্যিই অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কোনোদিন ফিরেও তাকায় না ওদের দিকে। একটা ঘর তো দূরের কথা, বছরে এক কুইন্টাল চালও জোটে না ওদের। কলিমুদ্দিন নিজেও বলেছেন, বিডিও বললেন আমি কিছু করে দিতে পারব না। যদি টাকা আসে, তখন দেখা যাবে।

এদিকে এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেছেন, 26-এর নির্বাচনের আগে আবারও লোককে ভাওতা দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। যদি প্রকল্পে সুবিধা না মেলে, তাহলে এরকম ক্যাম্পের আয়োজন করা বিলাসিতা মাত্র।

আরও পড়ুনঃ 8000mAh ব্যাটারি, ক্যামেরা ও প্রসেসরে চমক! লঞ্চ হল মিড রেঞ্জের iQOO Z10 Turbo+

অন্যদিকে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আবুল হোসেন বলেছেন, আমাদের কাছে যদি অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা অবিলম্বে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখব এবং ব্যবস্থা নেব। কলিমুদ্দিন সাহেবের যা প্রাপ্য, তা যাতে তিনি পান, সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে প্রশাসনের তরফ থেকে।

Leave a Comment