সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ বাংলাজুড়ে ভারী বৃষ্টির ধারা অব্যাহত রয়েছে। এর কারণ জায়গায় জায়গায় তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। সেইসঙ্গে দোসর হয়েছে মৌসুমি অক্ষরেখা। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মধ্য বাংলাদেশ এবং এর আশেপাশের এলাকায় একটি উচ্চ বায়ু ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। এদিকে শক্তিশালী মৌসুমী বায়ু হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থান করছে। অপরদিকে আবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর ওড়িশার উপর রয়েছে আরও এক আপার এয়ার সার্কুলেশন রয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাজুড়ে আজ শুক্রবার এবং আগামী কয়েকদিন ভালো রকমের দুর্যোগ চলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অব্যাহত থাকবে ভারী বৃষ্টিপাত।
তৈরি একাধিক ঘূর্ণাবর্ত
হাওয়া অফিসের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী (Weather Update), মৌসুমি অক্ষরেখার হিমালয়ের পাদদেশ-সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান। মৌসুমি অক্ষরেখা ফিরোজপুর চণ্ডীগড় দেরাদুন খেড়ি বাল্মীক নগর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে হিমালয়ের পাদদেশ এলাকা অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। মধ্য বাংলাদেশে সক্রিয় ঘূর্ণাবর্ত। এটি দক্ষিণ দিকে ঝুঁকে রয়েছে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর ওড়িশা-সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে একটি আপার এয়ার সার্কুলেশন। উত্তর পূর্ব আসাম এবং সংলগ্ন অরুণাচল প্রদেশ এলাকায় রয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। হিমাচল প্রদেশ এবং সংলগ্ন উত্তরাখণ্ড এলাকায় রয়েছে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত।
ভারী বৃষ্টিপাত চলবে
আবহাওয়া বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আগামী ছয় দিন ধরে, উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে, পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়ও ভারী বৃষ্টিপাত হবে।” এদিকে উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্র ও শনিবার কোচবিহার, মালদা, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি রয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের কথা বললে, এদিন ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। বাকি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা। সঙ্গে বইবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস। কাল বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পশ্চিম মেদিনীপুর বাঁকুড়া পুরুলিয়া পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান নদিয়া মুর্শিদাবাদ জেলার কিছু অংশে।
আরও পড়ুনঃ এক কেন্দ্র বাদ দিয়ে ২৯৩ বিধানসভার ভোটার তালিকা জারি, নিজের নাম আছে কিনা দেখুন
এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলির নিম্নাঞ্চলগুলি নদীর জল উপচে পড়ার কারণে বন্যার মতো পরিস্থিতির ঝুঁকিতে রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে ভারী বৃষ্টিপাতের পর দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) পশ্চিমবঙ্গে জল ছেড়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাত ইতিমধ্যেই কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং ফসল নষ্ট করেছে, যার ফলে রাজ্য জুড়ে সবজির দাম বেড়েছে। ডিভিসি-চালিত বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে রাস্তাঘাট ভেসে গেছে এবং কৃষিজমি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সপ্তাহে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায়, তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা খুব কম।