সহেলি মিত্র, কলকাতা: লেপচাজগৎ, পাহাড় প্রেমীদের কাছে রক আলাদাই ভালো লাগার জায়গা। এই জায়গায় গেলে চোখ আটকে যায়, ঠিক তেমনই মনটাও ভালো হয়ে যায়। শীত হোক বা বর্ষা, কিংবা গ্রীষ্মকাল, সবসময়ই পর্যটকদের ভিড়ে এই জায়গাটি থিকথিক করে। যাইহোক, এবার এই লেপচাজগৎ-এ এমন এক জিনিস মিলল যা সকলকে অবাক করে রেখে দিয়েছে। আপনিও কি আগামী দিনে লেপচাজগৎ যাওয়ার প্ল্যান করছেন? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি রইল শুধুমাত্র আপনার জন্য।
লেপচাজগৎ-এ মিলল নতুন উদ্ভিদ
আসলে এবার এই লেপচা জগতের মতো পাহাড়ি সুন্দর জায়গায় নতুন উদ্ভিদ মিলেছে (New Plant Found In Lepcha Jagat)। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। পাইন গাছে ঘেরা এই লেপচা জগত-র মতো সুন্দর এবং শান্ত জায়গা, খুব কমই আছে। এখানে রয়েছে বেশ কিছু হোটেল, হোমস্টে এবং ছোট ছোট জনপদ। সম্প্রতি এই জায়গাটিতে বিজ্ঞানীদের একটি দল সার্ভে করেন। আর এই সার্ভেতেই উঠে আসে একটি বিশেষ বিষয় যা সকলকে অবাক করে রেখে দিয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাত হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা সেই লেপচা জগতেই হদিশ মিলল একটি বিরল উদ্ভিদের। তবে নিছকই একটি উদ্ভিদ নয়। এমন একটি উদ্ভিদ পৃথিবীতে যে এখনও রয়েছে, তা কেউ কখনও খেয়ালই করেননি!
সার্ভে চালাল বিজ্ঞানীদের দল
আসলে এই ঘটনার আরও গভীরে যেতে ফিরে যেতে হবে ২০১৬ সালে। ২০১৬ সালে মোনালিসা দে দার্জিলিংয়ের এই লেপচা জগতে এসেছিলেন গবেষণা করতে। লেপচা জগত থেকে তিনি বেশ কিছু উদ্ভিদের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। সেগুলো ঝাড়াই–বাছাই করতে গিয়েই দেখা যায়, তার মধ্যে রয়েছে প্লেগিওকিলা মেঘারিয়ানা (Plagiochila Meghariana) নামে এমন একটি মস গোত্রীয় পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ, গোটা দুনিয়ায় যার অস্তিত্বের কোনও রেকর্ড–ই নেই।
আরও পড়ুনঃ নৈহাটিতে বড় মা’র পুজো দিতে গিয়ে বিপত্তি, গঙ্গার জল বেড়ে যাওয়ায় ডুবল পুণ্যার্থীর গাড়ি
তিন মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের এই উদ্ভিদটি সহজে চোখে পড়ার কথাও নয়। মোনালিসাও সম্ভবত খেয়াল করেননি। তবে কলকাতা ফিরে গিয়ে শুভদীপের সঙ্গে গবেষণা করার সময়ে সেটি তাঁর নজরে পড়ে। তার পরে গত ৯ বছর ধরে চলেছে দীর্ঘ গবেষণা। এরপর গত ৮ অগস্ট নিউজি়ল্যান্ডের বিখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ‘ফাইটোট্যাক্সা’ (ভলিউম-৭১৪-২)–তে মোনালিসা ও শুভদীপের এই অনন্য আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, লেপচা জগতে প্লেগিওকিলা মেঘারিয়ানা আবিষ্কারের গুরুত্ব সম্পূর্ণ অন্য মাত্রার।
কী বলছেন বিজ্ঞানীর?
বিজ্ঞানী শুভদীপের কথায়, ‘প্রাণী ও উদ্ভিদের বৈচিত্রের বিচারে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের কোনও তুলনাই হয় না। এটা যেন প্রকৃতির এক গোপন রত্নভান্ডার। এখনও এখানে নতুন ধরনের উদ্ভিদ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। এতেই বোঝা যায়, এখানকার জীববৈচিত্র কতটা সমৃদ্ধ।’