সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারত-আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্কে (India US Trade) দিনের পর দিন বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কবৃদ্ধির চাপ দেওয়াতে এবার পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে প্রস্তুত দিল্লি। হ্যাঁ, ভারতের এই পদক্ষেপে মার্কিন অর্থনীতি বিরাট ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। তবে হটাৎ কী ফন্দি আঁটল ভারত?
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি
উল্লেখ্য জানিয়ে রাখি, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থে ভারতীয় ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর 25% শুল্ক আরোপ করেছিল। ভারত এটিকে WTO -র নিয়মের বিরুদ্ধ বলেই দাবি করে এবং মে মাসে আমেরিকাতে নোটিশ পাঠায় যে, শুল্ক না কমালে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কোনও সদুত্তর দেয়নি।
এরপর চলতি বছরের জুন মাসে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর শুল্ক 25% থেকে বাড়িয়ে 50% করা হয় আর 31 জুলাই সমস্ত ভারতীয় পণ্যের উপর 25% শুল্ক আরোপ করা হয়। শুধু তাই নয়, 6 আগস্ট রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর আরো 25% শুল্ক আরোপ করা হয় আমেরিকার তরফ থেকে। আর এতে এখন ভারতের 86.5 বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি মার্কিন বাজারে 50% পর্যন্ত করের আওতায় পড়ছে বলে জানা যাচ্ছে।
ভারতের পাল্টা জবাব
তবে News 18-এর রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, ভারত প্রথম দফায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের উপর এবার শুল্ক বাড়াতে পারে। তালিকায় থাকছে বাদাম, আখরোট, আপেল, ডাল, কাগজ, মোটরসাইকেল, কেমিক্যাল ইত্যাদি। আর এই পদক্ষেপ WTO -এর নিয়ম মেনেই হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের ফলে ভারতের যে 1.91 বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে, তা উসুল হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শুল্ক আরোপের আগে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে 86 বিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি করত। অন্যদিকে আমেরিকা ভারতকে বিক্রি করতে মাত্র 45 বিলিয়ন ডলারের পণ্য। আর এর মধ্যে 13.6 মিলিয়ন ডলারের জ্বালানি রপ্তানি ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছে, বাণিজ্য যুদ্ধ যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে ভারতের জিডিপি 0.3% এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি 8% ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ফিচার্সে নজরকাড়া, দামও মধ্যবিত্তদের বাজেটে! নতুন দু’দুটি SUV আনছে Hyundai
এদিকে বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির 41%-ই রাশিয়া থেকে আসে, যাতে 2024 সালে 3.8 বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে। কিন্তু ছাড়ের হার কমে এখন প্রতি ব্যারেলে মাত্র 2 ডলারের নীচে এসেছে। আর রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করলে ভারতের আমদানি বিল প্রায় 9 থেকে 11 বিলিয়ন ডলার বাড়তে পারে।