সহেলি মিত্র, কলকাতা: এ যেন মিনি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস! লোকাল ট্রেন ছুটছে ঘন্টায় ১০০ কিমি-রও বেশি গতিতে! শুনে চমকে গেলেন তো? তবে বাংলার প্রথম এসি লোকাল (AC Local) ট্রেনে উঠে এরকমই বলছেন সাধারণ রেল যাত্রীরা। অবশেষে সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শিয়ালদা-রানাঘাট রুটে চালু হয়েছে বাংলার প্রথম এসি লোকাল ট্রেন। এদিকে এই ট্রেন পেয়ে বেজায় খুশি যাত্রীরা। তবে সকলে সবথেকে বেশি চমকে গিয়েছেন এর গতি দেখে। এর স্পিড আপনার মাথা ঘুরিয়ে দেবে।
১০৬ কিমি প্রতি ঘন্টা বেগে ছুটল AC লোকাল ট্রেন
উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে সামাজিক মাধ্যমে এসি লোকাল ট্রেন নিয়ে নানারকম ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। এবারও তেমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যা দেখে চমকে গিয়েছেন সকলে। ভাইরাল হওয়া ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে একটি মেয়ে এসি লোকাল ট্রেনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং ট্রেনের গতিবেগ ঠিক কতটা সেটা নিজের ফোনে চেক করছেন।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ট্রেনের গতিবেগ ১০০ থেকে ছাড়িয়ে কখনো ১০৩ বা ১০৬ হয়ে যাচ্ছে। অবশ্য সর্বোচ্চ স্পিড ১০৬ অবধিই উঠেছিল। প্রথম দিন যাত্রী সংখ্যাও নাকি বেশ অনেকটাই ছিল বলে খবর। একদিনে নাকি যাত্রী সংখ্যা ১০, ০০০ ছিল এসি লোকাল ট্রেনে বলে খবর।
এসি লোকাল ট্রেনের কিছু খুঁটিনাটি
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম এসি লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে। পূর্ব ভারতে এই ধরণের প্রথম পরিষেবা শিয়ালদহ-রানাঘাট রুটে চালু হয়েছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দুটি এসি লোকাল ট্রেন সরবরাহ করা হয়েছে, তবে প্রাথমিকভাবে কেবল একটিই চলবে। চাহিদা এবং পরিচালনা মূল্যায়নের উপর নির্ভর করে, পরবর্তীতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। নিয়মিত ট্রেনের মতো, টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করলে সর্বনিম্ন ভাড়ার সাথে ২৫০ জরিমানা দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, শিয়ালদহ-দমদম ভাড়া ৩৫, তাই লঙ্ঘনকারীদের মোট ২৮৫ দিতে হবে।
এসি লোকালটিতে ১২টি কোচ রয়েছে যার ১,১২৬টি আসন রয়েছে। এই পরিষেবাটি সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত চলবে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সমস্ত স্টেশনে থামবে না। রানাঘাট-শিয়ালদহ রুটে, এটি চাকদহ, কল্যাণী, কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি, ব্যারাকপুর, খড়দহ, সোদপুর, দমদম এবং বিধাননগর স্টেশনে থামবে। রানাঘাট থেকে ট্রেনটি সকাল ৮:৩২ টায় ছেড়ে শিয়ালদহে সকাল ১০:১০ টায় পৌঁছাবে। ফিরতি পরিষেবা শিয়ালদহ থেকে সন্ধ্যা ৬:৫০ টায় ছেড়ে রানাঘাটে রাত ৮:৩২ টায় পৌঁছাবে।
আরও পড়ুনঃ মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দিয়ে ১১০০ টাকা পতন সোনা-রুপোর দর! আজকের রেট
শিয়ালদহের ডিভিশনাল পার্সোনেল অফিসার একলব্য চক্রবর্তী বলেন, প্রতিটি কোচে ৩০ টনের এসি ইউনিট লাগানো আছে। যেসব যাত্রী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা ট্রেনের গার্ড বা ড্রাইভারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রতিটি কোচে তিনজনের জন্য স্টেইনলেস স্টিলের আসন, সিসিটিভি ক্যামেরা, জিপিএস-ভিত্তিক এলইডি ডিসপ্লে, ঘোষণা এবং টকব্যাক সিস্টেম রয়েছে। ট্রেনের উভয় প্রান্তে দুটি করে মহিলা কোচ থাকবে। ইন্টার-কোচ করিডোর দুটি বগির মধ্যে চলাচলের অনুমতি দেবে। মেট্রোর মতোই ট্রেনটি স্টেশনে থামার পরেই দরজা খোলা হবে এবং ছাড়ার আগে বন্ধ হয়ে যাবে। টিকিট অনলাইনে এবং স্টেশন কাউন্টারে উভয় জায়গাতেই কেনা যাবে।