‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’-এ বিপত্তি! রাস্তা কেটে দু’ভাগ করে প্রতিবাদ স্থানীয়দের

Amader Para Amader Samadhan

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাতে বাকি মাত্র আর কয়েক মাস, তারপরেই বছর ঘুরলেই শুরু ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। সকলের নজর এই নির্বাচনকে ঘিরে কারণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্থির হবে বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সিংহাসনে কে বসতে চলেছে। তাইতো এখন থেকেই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি উঠে পড়ে লেগেছে সেই সিংহাসন হাতানোর তাগিদে। ইতিমধ্যেই নিজের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে শাসক দল দুয়ারের সরকারের ভঙ্গিতেই চালু করেছে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি। কিন্তু এবার সেই কর্মসূচি করতে গিয়েই দ্বিখণ্ডিত রাস্তায় আটকা পড়লেন বিডিও, পুলিশ।

ঘটনাটি কী?

পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের জৌগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম টেঙ্গাবেড়িয়ায় রাস্তার হাল অত্যন্ত বেহাল। সেখানে একটি বহু প্রাচীন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আর তার গা ঘেঁষেই রয়েছে গ্রামের প্রধান রাস্তা। কিন্তু সেই প্রধান রাস্তা অত্যন্ত বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার দীর্ঘ ওই রাস্তার হাল ফেরাতে অনেক বার ব্লক প্রশাসন ও জৌগ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে আবেদন এবং নিবেদন করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু কোনো কিছুতেই সমাধান মিলল না। অভিযোগ সমস্ত এলাকায় রাজ্য সরকারের নজর থাকলেও তাদের এলাকায় ঠিকভাবে কোন উন্নয়নমূলক কাজ এ হচ্ছে না। এমতাবস্থায় সেই ক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠল গ্রামের বাসিন্দারা।

রাস্তা খুঁড়ে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের

স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ১২ আগস্ট রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে প্রতিবাদ করতে টেঙ্গাবেড়িয়ার বাসিন্দারা পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সামনেই কোদাল দিয়ে রাস্তায় বড় গর্ত খুঁড়েছিল। যার ফলে রাস্তা পেরিয়ে ও পারে যেতেই পারলেন না প্রশাসনের কর্তারা। কর্মসূচি নিয়ে বিরাট সমস্যায় পড়লেন তাঁরা। পঞ্চায়েতের প্রধান মল্লিকা মণ্ডল এবং উপপ্রধান সাজাহান মণ্ডলও হাজির ছিলেন ‘সমাধান’ কর্মসূচিতে। এদিন বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, ‘‘পথশ্রী প্রকল্পে সর্বত্র রাস্তা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের ব্যবহারের রাস্তা তো হতশ্রী! এত দিনেও সমাধান হল না কেন?’’

গ্রামবাসীদের অভিযোগ অস্বীকার পঞ্চায়েত মন্ত্রীর

প্রতিবাদমুখর হয়ে গ্রামবাসীদের উত্তেজনা যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছয় তখন বিডিও রাহুল বিশ্বাস রাস্তা সংস্কার হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন গ্রামবাসীদের। আর তার পরেই সবটা মেনে নিতে বিক্ষোভকারীরা গর্ত বুজিয়ে দেয়। এদিকে এই ঘটনায় পঞ্চায়েত প্রধান মল্লিকার যুক্তি, ‘‘অনেকেই বলছে টেঙ্গাবেড়িয়া গ্রামের একটি বুথে বিজেপি জিতেছে বলে আমরা ওই গ্রামের রাস্তা সংস্কার হতে দিচ্ছি না, কিন্তু এই অভিযোগ সত্য নয়। ইতিমধ্যে আমরা ‘পথশ্রী-১’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।” এছাড়াও তিনি গোটা ঘটনাকেই বিজেপিধারার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আরও পড়ুন: কোটি টাকার চুল ভর্তি ট্রাক লুঠ নদিয়ায়! গ্রেফতার সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ তিন

প্রসঙ্গত, গর ২ আগস্ট থেকে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। যার মাধ্যমে সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে রাজ্যের প্রতিটি বুথে বরাদ্দ ১০ লক্ষ টাকার ব্যয় কোথায় হবে, তা ঠিক করবেন সাধারণ মানুষ। জানা গিয়েছে প্রথম ধাপে ২৭ হাজারেরও বেশি ‘জনতার দরবার’ শিবিরের মাধ্যমে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এছাড়াও প্রত্যেক শিবিরে থাকবে সরকারী আধিকারিকদের উপস্থিতি, যাঁরা শংসাপত্র দিয়ে প্রকল্পে সিলমোহর দেবেন। একই সঙ্গে মিলবে ‘দুয়ারে সরকার’-এর পরিষেবাও, যেখানে নাগরিকেরা ব্যক্তিগত অভিযোগ ও সমস্যার প্রতিকার পেতে পারেন।

Leave a Comment