মায়ের থেকে মাত্র ৬ বছরের ছোট মেয়ে! বনগাঁর ভোটার তালিকায় বাংলাদেশির কীর্তি ফাঁস

Fake Voter Controversy

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। হাতে কয়েক মাস এখনও বাকি, তবুও এখন থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছেন রাজনৈতিক দলের একাংশ। তবে তার আগে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ নিয়ে শাসক থেকে বিরোধী, সোচ্চার সব পক্ষই। এমতাবস্থায় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় ভোটার তালিকায় উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০২৩-২০২৪ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী দেখা গেল মায়ের বয়স যেখানে ২৬ বছর সেখানে মেয়ের বয়স ২০ এবং ছেলের বয়স ১৮। তার ওপর রয়েছে বাংলাদেশী যোগ, ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল শোরগোল।

ভোটার তালিকায় ফের অসঙ্গতি!

বর্তমান পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ব্লকের গোপালনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের নতুন গ্রামের বাসিন্দা তথা একটি পরিবারের কর্তা হলেন জাহিদ খান, যার বয়স ৪৫ বছর। এদিকে তাঁর স্ত্রী ময়না খাঁ-র বয়স ২৬ বছর। মেয়ে মিতা খাঁ-র বয়স ২০ এবং ছেলে সিরাজ খাঁ-র বয়স ১৮ বছর। বয়সের এমন গোলযোগ দেখে স্থানীয় বিরোধী দলের দাবি, এরা সকলেই ভুয়ো ভোটার। সকলেই ভুয়ো নথি দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে থাকছেন। চোরাপথে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে। এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে ভারতীয় ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ করল বিজেপি।

আসল সত্যি প্রকাশ্যে আনলেন ময়না খাঁ

এদিকে ভোটার তালিকায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রসঙ্গে গোপালনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের নতুন গ্রামের বাসিন্দা ময়না খাঁ-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এদেশের বাসিন্দা। ছেলে ও মেয়ের নাম সঠিকভাবে ভোটার তালিকায় উঠলেও বয়স কীভাবে ভুল হল, জানি না।’ এছাড়াও তিনি এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ‘আমার স্বামী বাংলাদেশি। বিয়ের পর স্বামী আমার বাবাকে নিজের বাবা সাজিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে। বাবা মারা গিয়েছেন অনেকদিন আগে।’ আর এই দাবিতে ভুয়ো ভোটারের প্রসঙ্গের জাল আরও ছড়াল বনগাঁয়।

তৃণমূল বিজেপির তরজা

গতকাল অর্থাৎ বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল বনগাঁর বিজেপি কাউন্সিলার দেবদাস মণ্ডল। তিনি সেই সময় শাসকদলকে বিঁধে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, মায়ের বয়স ২৬ হলে তাঁর দুই সন্তানের বয়স ২০ ও ১৮ হয় কি করে? যদিও অভিযোগের দায়ভার নিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রসঙ্গে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘আমরা বাড়ি বাড়ি ভূতুড়ে ভোটার খুঁজছি। বিজেপি যদি এরকম ভোটারের হদিশ পায় নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করুক। শুধু শুধু তৃণমূলকে দোষারোপ করে লাভ হবে না।’

আরও পড়ুন: ‘যত দেখাবি, তত আসব’, ডানকুনিতে কালো পতাকা দেখানোর পাল্টা দিলেন শুভেন্দুর

দেগঙ্গায় উঠে এল ভুয়ো ভোটারের হদিস

অন্যদিকে একই ঘটনার ছায়া দেখা যায় দেগঙ্গায়। দেগঙ্গা ১ পঞ্চায়েতের ১১৯ বুথের ভোটার তালিকায় দেখা যায় শেফালি মণ্ডলের মায়ের নাম ঊষারানি মণ্ডল। কিন্তু আদতে তা নয়, শেফালি আদতে বাংলাদেশি। তিনি এদেশে এসে দেগঙ্গার বেলিয়াঘাটা এলাকার বাসিন্দা ঊষারানি মণ্ডলের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এবং তাঁকে মা বলে সম্বোধন করতেন। পরবর্তীতে তিনি তাঁর ছেলেকেও নিয়ে এসে এদেশের ভোটার তালিকায় নাম তোলেন। কিন্তু পরে সমস্ত ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শেফালী দেবী আসল সত্যি প্রকাশ্যে আসেন।

Leave a Comment