“২৮০০ কুকুরকে খাবারে কিছু মিশিয়ে মেরে ফেলেছি!” বিধানসভায় দাবি বিধায়কের

Stray Dogs

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বিগত কয়েকদিন ধরে দিল্লিতে পথকুকুরের কামড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তার জেরে বাচ্চাদের মধ্যে ছড়াচ্ছে জলাতঙ্ক রোগ। তাই এই সমস্যা দূর করতে চলতি সপ্তাহের গত সোমবার অর্থাৎ ১১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সন্দীপ মেহতা ও বিচারপতি আর মহাদেবন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকা থেকে সমস্ত পথকুকুরদের সরিয়ে ফেলতে হবে। এবং ডগ শেল্টারে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এই রায় মানতে নারাজ বহু পশুপ্রেমীই। তাই সেই রায় নিয়ে তোলপাড় গোটা দিল্লি। এমতাবস্থায় নিজের হাতে কুকুর হত্যার দায় স্বীকার করে কর্ণাটকের জনতা দলনেতা এসএল ভোজেগৌড়া। যা নিয়ে শুরু হয় এক নয়া বিতর্ক।

২৮০০ কুকুরকে হত্যা নেতার

রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বুধবার, কর্ণাটক বিধানসভায় জনতা দল (সেকুলার) এর বিধায়ক এসএল ভোজেগৌড়া দাবি করেছেন যে, তিনি যখন চিকমাগালুরু মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন, সেইসময় শিশুদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রায় ২৮০০ কুকুরকে হত্যা করেছিলেন। এমনকি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সগৌরবে সেই হত্যার বিবরণীও তুলে ধরেন। ভোজেগৌড়া বলেন, “ খাবারে মাংসের সঙ্গে কিছু একটা মিশিয়ে দিয়েছিলাম আমরা। এরপর সেই খাবার প্রায় ২,৮০০ কুকুরকে খাইয়েছিলাম। তারা সেই খবর খেলে মারা যায় এবং তাদের দেহ নারকেল গাছের তলায় পুঁতে দেওয়া হয়।” সেইসঙ্গে তিনি এও দাবি করেন যে, পরে কুকুরদের ওই মৃতদেহকে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমর্থন ভোজেগৌড়ার

৩০০০ এর কাছাকাছি এই কুকুরগুলোকে হত্যা করার ঘটনায় এসএল ভোজেগৌড়া যে কোনোভাবেই অনুতপ্ত নয়, তা তিনি গর্বের সহিত উচ্চস্বরে বিধানসভায় জানিয়েছেন। তাঁর মতে আমরা প্রতিদিন কুকুরের কামড়ানোর ঘটনা দেখছি। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন হলে জেলেও যেতে রাজি আছি আমরা।’ এমনকি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, ”কেউ যদি রাস্তা থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন, তাহলে সরকার যেন তাঁদের বাড়ির মধ্যে কয়েকটি কুকুর ছেড়ে দেয়, যাতে তাঁরা বাস্তবটা বুঝতে পারবেন।”

আরও পড়ুন: ‘ননদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্বামীর!’ প্রতিবাদ করায় ভয়ঙ্কর পরিণতি হাওড়ার গৃহবধূর

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় নিয়ে যখন সকলে ক্ষিপ্ত তখন, গতকাল অর্থাৎ বুধবার, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে স্থানান্তর করা হয়। এদিন বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা ও বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চে শুনানি হয়। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সবপক্ষের সওয়াল জবাব শেষে শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণ করে বলেন যে গোটা সমস্যাই হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার জন্য। কেন আগে কোনও আইন কার্যকর করা হয়নি? সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। তাই যাঁরা রায় স্থগিতাদেশের আবেদন করতে এসেছেন, তাদের সবাইকে এই দায় নিতে হবে বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত। তাই আপাতত সেই রায়দান স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।

Leave a Comment