প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: মাত্র ৩ দিন আগে সিঙ্গুরের নার্সিংহোমে কাজে যোগ দিয়েছিলেন বছর ২৪ এর দীপালি জানা। কিন্তু গত বুধবার অর্থাৎ ১৩ আগস্ট রাতে নার্সিংহোম থেকেই তাঁরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তবে সেই মৃত্যু নিছকই আত্মহত্যা নাকি খুব, তা নিয়ে ক্রমেই বাড়ছে সন্দেহ। এদিকে, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার শ্রীরামপুর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও, তা শেষ মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে মৃত নার্সের ময়নাতদন্ত কোথায় হবে, তা নিয়ে দিনভর ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হলে অবশেষে পরিবারের দাবি অনুযায়ী কল্যাণীর AIIMS-এ হতে চলেছে ময়নাতদন্ত।
ময়নাতদন্ত ঘিরে ধুন্ধুমার
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার শ্রীরামপুর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও, কিন্তু তা শেষ মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগ, মৃতার বাবা-মায়ের অনুমতি না নিয়েই পুলিশ দেহ সরিয়ে নিয়ে আসে কলকাতা পুলিশ মর্গে। আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তরুণীর পরিবার। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন— কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত তাঁরা চাইছেন না, ময়নাতদন্ত করতে হবে কল্যাণী এইমস বা কমান্ড হাসপাতালে। এই নিয়ে রীতিমত এলাকা জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সবুজ সংকেত দিল কল্যাণীর AIIMS
মৃত নার্সের পরিবারের দাবি ছিল যে, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পরে তাঁদের জানানো হয় মৃত নার্সের দেহ ময়নাতদন্ত হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সরকারি ময়নাতদন্ত নিয়ে একদমই আস্থা নেই মৃতার পরিবারের। তাই তাঁদের দাবি মেনেই সিঙ্গুরের মৃত নার্সের দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কল্যাণীর AIIMS-এ। এই বিষয়ে গতকালই কল্যাণী এইমসের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগে যোগাযোগ করেন হুগলি গ্রামীণ এসপি। এরপর কল্যাণী এইমস থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলার পরেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নার্সের দেহ ।
গ্রিন করিডর করে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ
সারারাত সিঙ্গুরের নার্সের মৃতদেহ পড়ে থাকে কলকাতা পুলিশ মর্গে। আজ অর্থাৎ শনিবার ভোরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পৌঁছয় পুলিশের একাধিক আধিকারিক। যেখানে কলকাতা পুলিশ সহ বেঙ্গল পুলিশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি সকালেই মৃতার মা-বাবাও পৌঁছে যান মর্গে। ভোর থেকেই দেহ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। এরপরই সকাল ৭টা নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল হাসপাতালের মর্গ থেকে দেহ নিয়ে বেরিয়েছে পুলিশ। গ্রিন করিডর করে দেহ সোজা কল্যাণী AIIMS-এ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: পুলিশের জালে ওরা! সিঙ্গুরে নার্সিং পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্যকর মোড়
প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরের নার্সিং পড়ুয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সিঙ্গুর থানার পুলিশ নার্সিংহোমের মালিক ও দীপালির প্রেমিক এই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা হলেন নার্সিংহোম মালিক সুবীর ঘোড়া ও রাধাগোবিন্দ ঘটন। আপাতত ধৃতদের চন্দননগর মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, ধৃত রাধাগোবিন্দ ঘটনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মৃত নার্সিং পড়ুয়ার। এবার দেখার বিষয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কী আসে।