সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ বিখ্যাত পরিচালক বিবেক রঞ্জন অগ্নিহোত্রী (Vivek Agnihotri) এবং বিতর্ক যেন একে অপরের পরিপূরক হয়ে গিয়েছে। এবার নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে তাঁর আসন্ন সিনেমা ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’। ইতিমধ্যে এই সিনেমার রোমহর্ষক ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। এই সিনেমায় ১৯৪৬ সালে দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং-এর পটভূমি তুলে ধরা হয়েছে। এই সিনেমায় বিখ্যাত বাঙালি চরিত্র গোপাল মুখোপাধ্যায় ওরফে গোপাল পাঁঠার পরিচয় বিকৃত করে দেখানোর অভিযোগ উঠল বিবেকের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হল এফআইআর (FIR)।
গোপাল পাঁঠার পরিচয় ‘বিকৃত’ করার অভিযোগ
১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট…এই দিনে, ক্যালকাটা (বর্তমানে কলকাতা)-য় চার দিন ধরে চলা ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক হিংসা নিমজ্জিত হয় এবং ১০,০০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। কলকাতার ইতিহাসে নজিরবিহীন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। এই বিশৃঙ্খলার মাঝেই আবির্ভূত হন গোপাল চন্দ্র মুখোপাধ্যায়, যিনি গোপাল পাঁঠা নামে পরিচিত। তাকে বীর এবং গুন্ডা উভয়ই মনে করা হয়। কলকাতার একজন গ্যাং লিডার, গোপাল মুসলিম জনতার হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দাবি করা হয় যে তার প্রচেষ্টা অনেক হিন্দুকে মৃত্যু এবং অপমান থেকে রক্ষা করতে সহায়ক ছিল, যা তাকে একজন কিংবদন্তির মর্যাদা এনে দেয়। তবে আসন্ন সিনেমায় তাঁর চরিত্রকে বিকৃত করে দেখানোর অভিযোগ করেছেন গোপাল মুখোপাধ্যায়ের নাতি শান্তনু মুখোপাধ্যায়।
খুব্ধ গোপাল পাঁঠার পরিবার
সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, গোপাল পাঁঠার নাতি শান্তনু মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “দাদুর চরিত্র সিনেমায় রাখা হবে বলে আমাদের কোনও অনুমতিই নেওয়া হয়নি। উল্টে ট্রেলারে বা সিনেমার গল্পে তাঁকে ‘এক থা কষাই গোপাল পাঁঠা’ বলে পরিচয় করানো হচ্ছে।” এই ‘ধৃষ্টতা’র জন্য পরিচালককে ক্ষমা চাইতে বলে আইনি নোটিসও পাঠিয়েছেন শান্তনু।
আরও পড়ুনঃ দুর্গাপুজোর আগে বাংলার অসংখ্য কর্মীর সাড়ে ১০ হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি, ভাতা বাড়ল ৭.৫%
শান্তনু আরও বলেন, “অনুশীলন সমিতির কাজে যুক্ত থাকার পাশাপাশি দাদু দুটো পাঁঠার মাংসের দোকান চালাতেন। কুস্তীগির ছিলেন, বুকের পাটা ছিল ঈর্ষণীয়। হিন্দিভাষীদের মুখে মুখে সেই বুকের পাটা হয় ‘পাট্টা’। শেষে তাঁর পেশা আর নেশা মিলিয়ে অপভ্রংশে নাম হয়ে যায় গোপাল পাঁঠা। কিন্তু দাদু আমার কষাই চরিত্র ছিলেন না, ভিলেনও ছিলেন না। ছিলেন সিংহহৃদয়। ১৯৪৬-এ মুসলিম লিগের দাঙ্গা প্রতিরোধে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে আতঙ্কিত মানুষের স্বার্থে যিনি অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। বাঁচিয়েছিলেন এই বাংলা ও বাঙালিকে। তাঁর চরিত্রকে বিকৃত করে দেখিয়েছেন বিবেক।”