কাজিরাঙার সবথেকে বয়স্ক হাতিনী মোহনমালার মৃত্যু, চোখের জলে জানানো হল শেষ বিদায়

Kaziranga mohanmala

সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের (Kaziranga National Park) সবথেকে বয়স্ক হাতিনী ছিল সে। কিন্তু বয়সের কাছে একটা সময়ে সকলকেই হার মানতে হয়, সে মানুষ হোক বা প্রাণী। যেমন কাজিরাঙার সবথেকে বয়স্ক হাতিনী মোহনমালা ৮৫ বছর বয়সে নিজের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। তাঁর এহেন মৃত্যু এক কথায় মেনে নিতে পারছেন পশুপ্রেমীরা।

মৃত্যু কাজিরাঙার সবথেকে বয়স্ক হাতিনীর

আসামের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান তাদের সবচেয়ে বয়স্ক হাতি মোহনমালাকে চোখের জলে বিদায় জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, মোহনমালা বৃহস্পতিবার সকাল ৯.৪০ মিনিটে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মারা যায়। কোহোরা রেঞ্জের বন রেঞ্জ অফিসার ডঃ বিভূতি রঞ্জন গগৈয়ের মতে, মোহনমালা ১৭ মে, ১৯৭০ সালে কাজিরাঙায় এসেছিল। প্রয়াত বন কর্মকর্তা দুর্গা প্রসাদ নেওগ পার্কের সংরক্ষণ প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য পার্ক কর্মকর্তাদের কাছে এগুলো উপহার দিয়েছিলেন। কয়েক দশক ধরে, মোহনমালা পার্কের অভ্যন্তরে টহল দেওয়া থেকে শুরু করে পর্যটকদের সাফারিতে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন ভূমিকা পালন করেছিল।

কীভবে মৃত্যু হল হাতিনীর?

রেকর্ড থেকে জানা যায় যে, সে দুটি শাবকের জন্ম দিয়েছে। একটি শাবক অল্প বয়সেই বাঘের আক্রমণে মারা যায়, অন্যটি হলদিবাড়ির কাছে হঠাৎ মারা যায়। কাজিরাঙার পশুচিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ সৌরভ বরগোহাঁই বলেন, “যখন হাতিটি মারা যায় তখন আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম। সে দাঁড়িয়ে ছিল তারপর হঠাৎ বসে পড়ে। এরপর মাটিতে শুয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।” তিনি জানান, দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে মোহনমালা জানুয়ারি মাস থেকে চিকিৎসা পর্যবেক্ষণে ছিল। ডাঃ ভূপেন শর্মা, ডাঃ কুশল শর্মা, ডাঃ বিশ্বজিৎ বড়ুয়া এবং ডাঃ ভাস্কর চৌধুরী সহ পশুচিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা তার চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার করেন, যার ফলে তার আয়ু বৃদ্ধি পায়। তবে শেষ রক্ষা হল না।

আরও পড়ুনঃ গ্রাহকদের বিরাট ঝটকা! দুটি সস্তার রিচার্জ প্ল্যান বন্ধ করে দিল Jio

৮৫ বছর বয়সী হাতিটিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পার্কের কর্মকর্তা, বনকর্মী এবং পশুচিকিৎসকরা জড়ো হয়েছিলেন। বন কর্মকর্তা জয়ন্ত দাস বলেন, “সে কেবল কাজিরাঙার সবচেয়ে বয়স্ক হাতিই ছিল না, আমাদের দলের একজন সম্মানিত সদস্যও ছিল।” কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের তরফে এক বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, “তাঁর মৃত্যুতে কাজিরাঙা কেবল একজন সদস্যকেই নয়, একজন অনুগত সহকর্মী, বন্যার সময়ে একজন রক্ষক, সাহস ও নিষ্ঠার এক প্রতিমূর্তিকে হারিয়েছে।”

Leave a Comment