প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: জনপ্রতিনিধি হয়ে আইন অমান্য! ভরা রাস্তায় পুলিশের গায়ে হাত তুলল এক তৃণমূল নেতা! ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি মালদহের নিউ ফরাক্কা এলাকায়। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তকে। ধৃতকে আজ আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। এদিকে পুলিশের সঙ্গে এমন কাণ্ড ঘটায় বিরোধী দল থেকে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
ঘটনাটি কী?
দ্য ওয়ালের রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, দুপুরে মালদহের নিউ ফরাক্কা ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে ট্রাফিক চেকিং করছিলেন এএসআই তাপস ঘোষ। সেইসময় একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যান আটকান। জানা যায় ওই পাট বোঝাই ভ্যান নাকি মালদহের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু ওই ধরনের গাড়ি জাতীয় সড়কে ওঠার অনুমতি নেই বলে সেই সময় এএসআই চালককে থামিয়ে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। আর তাতেই বাঁধে জোর বচসা। এমনকি কর্তব্যরত ওই ASI-কে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় পুলিশকে
পুলিশের তরফে অভিযোগ উঠে আসে যে, ভ্যানের মালিককে মুচলেকা দেখাতে বললে, ভ্যানচালক তড়িঘড়ি খবর দেয় মালিককে। ফোনে খবর পাওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে হাজির হন বেওয়া-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তারিকুল সেখ। সেখানে পৌঁছে তিনি নিজেকে শাসকদলের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন, কাজ যখন এগোচ্ছিল পুলিশের এএসআইকে উদ্দেশ্য করে চড়াও হন। পুলিশের গায়ে হাত, কটূক্তি, এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। জখম হন এএসআই তাপস ঘোষ। এরপর শুক্রবার রাতেই ট্রাফিক পুলিশের তরফে অভিযোগও জমা পড়ে ফরাক্কা থানায়।
গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে
লিখিত অভিযোগ মিলতেই ফরাক্কা থানার পুলিশ তৃণমূলের অভিযুক্ত উপ প্রধানকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু গ্রেফতারির পর থানায় বিধায়ক-সহ নেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। অবস্থা বুঝে পুলিশ উপপ্রধানকে গ্রেফতার করে ফরাক্কা থানা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় অন্যত্র। জানা গিয়েছে আজ ধৃতকে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা তুঙ্গে। প্রশ্ন উঠছে জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি প্রকাশ্যে পুলিশের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ ওঠে, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?
আরও পড়ুন: কাটোয়া থেকে আজিমগঞ্জ, আহমেদপুরের নতুন EMU ট্রেনের ঘোষণা পূর্ব রেলের! দেখুন সূচি
প্রসঙ্গত, মালদহের নিউ ফরাক্কা এলাকায় পুলিশের উপর তৃণমূল নেতার গায়ে হাত তোলার ঘটনাকে সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে দাবি করছেন ধৃত উপ-প্রধান তারিকুল সেখ। তিনি দাবি করেছেন যে, “আমি বেওয়া-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান। আমার গাড়ি পাট নিয়ে যাচ্ছিল। ট্রাফিক মোড়ে পুলিশ গাড়ি আটকায়, চাবি নিয়ে নেয়। কেন আটকানো হল তা জানতে গিয়েই সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।” যদিও এই ঘটনায় শাসকদলের তরফে কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।