বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: মহাকাশ জগতে আলোড়ন তুলবে ভারত। আগামী 15 বছরের মধ্যে 100টিরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)। শুক্রবার, আহমেদাবাদ ভিত্তিক স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের পরিচালক নীলেশ দেশাই নয়া দিল্লির এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই ঘোষণা করেন। শুধু তাই নয়, এদিন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার জন্য ‘ভিশন 2047’ এর রোডম্যাপও উপস্থাপন করেন তিনি।
মহাকাশ জগতে ঝড় তুলতে প্রস্তুত ভারত!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার নয়া দিল্লির ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নীলেশ দেশাই বলেন, 100টিরও বেশি স্যাটেলাইট মিশন, শুনতে অনেক বেশি মনে হলেও, 2040 সালের মধ্যে আদতে এটি বছরে মাত্র সাত থেকে আটটি করে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপ। দেশাই আরও জানান, চন্দ্রযান বা গগণযানের মতো অন্যান্য মিশনের পাশাপাশি এটিও আমরা সহজেই অর্জন করব।
এরপরই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সংক্রান্ত তথ্য সামনে এনে দেশাই যোগ করেন, এখনও পর্যন্ত বছরে মাত্র 5 থেকে 6টি করে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে ISRO। যা 2016 সালে ছিল সর্বোচ্চ। সে বছর একেবারে 9টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নতুন মিশনের জন্য কতটা প্রস্তুত? এমন প্রশ্নকে সামনে রেখে ইসরোর চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন জানান, মহাকাশ গবেষণার সংস্থা তার গতি বাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। মহাকাশ খাতে খুব শীঘ্রই একটি বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। আমাদের সময়সীমা দেশের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত। এদিন ISRO প্রধানের বক্তব্য ছিল, আমাদের এই মিশনগুলি আগামী দিনে নিশ্চিতভাবে দেশের জন্য বিরাট সুবিধা বয়ে আনবে।
জানা গিয়েছে, পরবর্তী লক্ষ্যগুলি পূরণ করতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বেসরকারি মহাকাশ সংস্থাগুলির প্রতিশ্রুতির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। সে অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে হোক কিংবা হার্ডওয়্যার তৈরির ক্ষেত্রে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতে কমপক্ষে 350টি বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা কাজ করছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ISRO-র 2047 সালের রোডম্যাপ পূরণের জন্য এই সংস্থাগুলির গুরুত্ব রয়েছে।
ভিশন 2047 মিশনের রোডম্যাপ
আহমেদাবাদ ভিত্তিক স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের পরিচালক নীলেশ দেশাই শুক্রবার ভিশন 2047 এর যে রোডম্যাপ উপস্থাপন করেছেন তাতে ঘোষিত চন্দ্রযান 4 এবং চন্দ্রযান 5 এর পাশাপাশি 2040 সালের চাঁদে ক্রু মিশনের আগে চন্দ্রযান 6, চন্দ্রযান 7 এবং চন্দ্রযান 8-ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, 2027-28 সময়সীমার মধ্যে ঘোষিত চন্দ্রযান 4 ও চন্দ্রযান 5 এর নমুনা প্রত্যাবর্তন মিশন সম্পন্ন হবে।
বলা বাহুল্য, ওই রোডম্যাপে চন্দ্রযান মিশনের পাশাপাশি মঙ্গল গ্রহের ল্যান্ডার মিশনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।। যা ভারতের প্রথম মঙ্গলযান থেকে এক ধাপ এগিয়ে। তবে এর সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি।
অবশ্যই পড়ুন: এশিয়া কাপের আগেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন শুভমন, বিশ্রামের নির্দেশ! কী হয়েছে গিলের?
প্রসঙ্গত, আগামী 15 বছরে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা যে শতাধিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে, তার বেশিরভাগই হবে পৃথিবীর পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ। এর মধ্যে প্রায় 80টি উপগ্রহ থাকবে শুধুমাত্র ভূমি ভিত্তিক পরীক্ষার জন্য। বাকিগুলি সমুদ্র এবং বায়ুমণ্ডলীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য কাজ করবে। যদিও ইতিমধ্যেই 16টি প্রযুক্তি প্রদর্শনী মিশনের পরিকল্পনা করে ফেলেছে ISRO।