প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই বিধানসভা নির্বাচন তাই জোর কদমে চলছে ভোট প্রস্তুতির কার্যকলাপ। এমতাবস্থায় এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকারের আদলে নির্মিত আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি। তবে এই কর্মসূচি নিয়ে এবার পড়াশোনার ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটল বাঁকুড়ার সরকারি স্কুলে। পঠন পাঠন চলাকালীন মাইক বাজিয়ে, ধামসা মাদল বাজিয়ে সরকারি কর্মসূচি চলতে থাকায় এবার অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়ল তৃণমূল।
ঘটনাটি কী?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার বাঁকুড়ার খাতড়ায় চাকা নির্মলানন্দ হাইস্কুলে হয়েছিল আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান কর্মসূচি। একদিকে চলছে পুরবাদের পঠন পাঠন অন্যদিকে স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে চলছে এই সরকারি কর্মসূচি। মাইক বাজানোর পাশাপাশি ধামসা মাদল নিয়ে নাচ-গান চলেছে বলেও শোনা গিয়েছে। সব মিলিয়ে শিকেয় উঠেছে পড়াশোনা। শাসকদলের এই কার্যকলাপে দিনের পর দিন শিক্ষায় ব্যাপক খারাপ অবস্থা হতে থাকায় কটাক্ষের মুখে পড়ল তৃণমূল। যদিও, পাল্টা জবাব দিয়েছে মমতার দল।
কী বলছেন প্রধান শিক্ষক?
স্কুল চলাকালীন সরকারি প্রকল্পের এই হুলুস্থুল কাণ্ড নিয়ে প্রধান শিক্ষক দেবকান্তি মহান্তি জানিয়েছেন যে, ” সরকারি প্রকল্পের জন্য মাইক বাজছিল, বাচ্চাদের পড়াশোনায় ক্ষতি হওয়ায় আমরা মাইক বন্ধ করতে বললে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়।” তাঁর আরও সংযোজন, “পঠনপাঠন এমন একটা বিষয় যে, তার পাশাপাশি অন্য সরকারি প্রকল্প চালানো মুশকিল। তবে যেহেতু প্রধান শিক্ষককে সরকারি ভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে যে এই স্কুলে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি করা হবে, তার ফলে সরকারি কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়ার কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তবে রবিবার এই ধরনের কর্মসূচি করা হলে, বাচ্চাদের পড়াশোনা করতে সুবিধা হবে।”
আরও পড়ুন: ফারাক্কায় ট্রাফিক পুলিশের ASI-কে মারধর, প্রাণনাশের হুমকি! গ্রেফতার তৃণমূলের উপপ্রধান
বিদ্যালয়ে আমাদের পাড়া আমাদের সমাধানে মাইক বাজানো নিয়ে তৃণমূলের তরফে পাল্টা বলা হয়েছে, “মাইক বাজিয়ে, ধামসা, মাদল বাজিয়ে কিছু করা হয়নি। পড়ুয়াদের পড়াশোনায় যাতে কোনও সমস্যা হয়, তার নজর রাখা হয়েছিল।” এদিকে এই ঘটনা নতুন নয়, বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির ক্ষেত্রে বরাবরই সরকারি বিদ্যালয়গুলোকে চিহ্নিত করা হয়। যার ফলে পড়াশোনার ক্ষতি হয় পড়ুয়াদের। তার উপর রাজ্যে পড়াশোনার খুবই খারাপ অবস্থা। কোথায় পড়ুয়া নেই, তো কোথাও আবার ছাত্রছাত্রীর অনুপাতে শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।