বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারত থেকে জল ছাড়ার কারণে বন্যায় ভাসছে পাকিস্তান! এমনটাই দাবি করছে পাক সংবাদমাধ্যম ডন। তাদের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, রবিবার শতদ্রু নদীতে ভারত বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার কারণে পাঞ্জাবের বাহাওয়ালনগর শহরটিতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে পাঞ্জাবের একাধিক এলাকা জলের তলে। এছাড়াও স্থানীয় বহু মানুষ ঘর ছেড়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। রিপোর্ট বলছে, ভয়াবহ বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে এখনও পর্যন্ত দেশটিতে 788 জনের মৃত্যু হয়েছে।
বন্যায় বেহাল অবস্থা পাকিস্তানে
ডনের রিপোর্ট অনুযায়ী, একটানা বৃষ্টি এবং ভয়াবহ বন্যার কারণে খাইবার পাখতুনখোয়া, পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাঞ্জাব সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়াবহ বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে বিভিন্ন প্রদেশজুড়ে নদীগুলি উত্তাল থাকায় পাঞ্জাব সরকার ইতিমধ্যেই হাই অ্যালার্ট জারি করেছে। এছাড়াও চেনাব এবং সিন্ধু নদীতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলেই খবর। তবে পাক সংবাদমাধ্যম যে খবর ঢাক পিটিয়ে বলছে তা হল, ভারত থেকে সদদ্রু নদীতে জল ছেড়ে দেওয়ার কারণে নাকি গান্ডাসিন ওয়ালায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত থেকে জল ছেড়ে দেওয়ার কারণে নাকি বহু নদীর পরীক্ষামূলক বাঁধ ভেঙেছে। এছাড়াও পাকিস্তানের একাধিক গ্রামে ঢুকে পড়েছে নদীর জল। বিশেষত পাকিস্তানের বাবা ফরিদ সেতু এবং ভুকান পাটনের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলি বন্যার জলে প্লাবিত। যদিও ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন এবং উদ্ধারকারী দলের তৎপরতায় ওই অঞ্চলের মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে।
স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা করছে, আগামী 48 ঘণ্টার মধ্যে গান্ডা সিং ওয়ালায় ভারী বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। রিপোর্ট বলছে, বন্যা হলে ওই অঞ্চলের জলস্তর 21 ফুট উপর থেকে বইবে। শুধু তাই নয়, বন্যার সময় জলের প্রবাহ 1,30,000 কিউসেক ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনটা হলে রাভি ও চেনাব নদীতেও বন্যার ঝুঁকি বাড়বে। পাশাপাশি মুষলধারে বৃষ্টির কারণেও পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
ভারতকে দোষারোপ পাকিস্তানি গণমাধ্যমের
পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যম দেশটিতে বন্যার কারণে ভারতকে কাঠগোড়ায় তুলেছে। পাক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে ঘটা করে লেখা হচ্ছে, সিরাবের উপনদী তাওয়িতে ভারত থেকে জল ছাড়ার কারণেই এমন বন্যা হয়েছে। এর ফলে গুজরাট, মান্ডি, বাহাউদ্দিন, চিনিওট এবং ঝাঙ সহ ওই অঞ্চলের নিম্নাংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পাকিস্তানের বন্যা কমিশন সতর্ক করে জানিয়েছে, মঙ্গলবারের মধ্যে চেনাব এবং সিন্ধু নদীর জল বিপদ সীমা ছাড়িয়ে বন্যার পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।
অবশ্যই পড়ুন: প্রথম দিনেই রেকর্ড কলকাতা মেট্রোর! হাওড়া-সেক্টর ফাইভ রুটে একদিনে আয় লক্ষাধিক টাকা
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে বন্যার জন্য ভারতকে দায়ী করা হলেও, আদতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামাবাদকে সতর্ক করেছিল নয়া দিল্লি। রিপোর্ট অনুযায়ী, বন্যা পরিস্থিতির আগে পাকিস্তানের বহু সরকারি কর্মকর্তাও জনগণকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তারপরও বন্যা পরিস্থিতির জন্য ভারতকেই দায়ী করছে সে দেশের জনগণ! কিন্তু বাস্তব চিত্র হল, সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি সাথে এই বন্যার কোনও সম্পর্ক নেই।