প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অযোগ্যের কলঙ্ক বইতে হচ্ছে চাকরি প্রার্থীকে! এবার সেই কলঙ্ক ঘোচাতে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির আবহে ‘দাগি’দের তালিকায় নাম ওঠায়, নিজেকে ‘যোগ্য’ প্রমাণ করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন সোনালি দাস। তবে সেই মামলা সম্পূর্ণ খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয় এই সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টকেই চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিল শীর্ষ আদালত।
ঘটনাটি কী?
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় সোনালি দাস নামে এক চাকরিপ্রার্থী নিয়োগ পেয়েছিলেন। এমতাবস্থায় সিবিআই ৯৫২ জনের ওএমআর শিট উদ্ধার করেছিল এবং দাবি করা হয়েছিল যে, ওই ওএমআর শিটগুলি থেকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে SSC সেই তালিকা প্রকাশও করে। আর ওই তালিকায় নাম উঠে আসে সোনালি দাসের। কিন্তু তাঁর দাবি, পরীক্ষার সময়ে তাঁকে যে ‘অ্যানসার কি’ দেওয়া হয়েছিল, সেখানে, তিনি সফল ভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এমনকি কাউন্সেলিং পর্বেও ভালো ফলাফল করেছিলেন। তা সত্ত্বেও কীভাবে তাঁর নাম অযোগ্যের তালিকায় উঠে আসে? তাই নিয়ে এবার মামলার জল গড়াল সুপ্রিম কোর্টে।
মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে
যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অযোগ্যের তালিকায় নাম উঠে আসায় ২০২৩ সালে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলা করেন সোনালি দাস। মামলাকারীর দাবি ছিল, তিনি ‘যোগ্য’ প্রার্থী। এখনও সেই মামলাটি হাই কোর্টে বিচারাধীন। আর সেই সময় মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়ে যায়। শুধু তাই নয় যাঁরা ‘দাগি অযোগ্য’ তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরীক্ষাতেও বসতে পারবেন না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। তাই সেই নিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন তিনি। গতকাল অর্থাৎ সোমবার সেই মামলায় অবশেষে বড় রায় দিল শীর্ষ আদালত।
আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টের
দ্য ওয়ালের রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ সোমবার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চে সোনালি দাসের মামলাটি ওঠে। সেই সময় মামলাকারী দাবিকরেন, তিনি ‘যোগ্য’। এসএসসির ভুলের জন্যই বর্তমানে তিনি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসতে পারছেন না, তাই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানানো হোক এই দাবি করেন। এমনকি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাতে তিনি অংশগ্রহণ করতে পারেন, তার আবেদনও জানান তিনি। কিন্তু সেই মামলা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে এ বিষয়ে চরম সিদ্ধান্ত হাই কোর্টই নেবে।
আরও পড়ুন: আধার ছাড়া আর মিলবে না রেশন? খাদ্যসাথী নিয়ে বড় নির্দেশনা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
এদিন সুপ্রিম কোর্ট মামলাকারীর আবেদন শুনে প্রশ্ন তোলে যে, ”এ মামলা এত দিন ধরে কেন ঝুলে রয়েছে?” তারপরেই দ্রুত শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয় হাইকোর্টকে। সেক্ষেত্রে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চ এও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, “কোনও চাকরিপ্রার্থী যদি মনে করেন তিনি ‘দাগি অযোগ্য’ নন এবং এর সপক্ষে তিনি উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারেন, তবে তা হাই কোর্টকেই বিবেচনা করতে হবে।” কিন্তু কবে এই মামলার সুবিচার মিলবে হাইকোর্টে তা নিয়ে কোনো স্পষ্ট মন্তব্য করেনি আদালত।