প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দিনের পর দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এবার দীর্ঘ কয়েক দশক পরে কলকাতায় গড়ে উঠতে চলেছে আরও একটি শ্মশানঘাট (New Crematorium In Kolkata)! বর্তমানে কলকাতা পুরসভার অধীনে সাতটি শ্মশান রয়েছে। কিন্তু তাতেও সমস্যা কিছুতেই মিটছে না। প্রত্যেক শ্মশানক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে সকলকে। তাই এবার সেই সমস্যা দূর করতে নয়া সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। তবে একা কলকাতা পুরসভা নয় এর সঙ্গে নয়া শশাঙ্কিত নির্মাণ কাজে হাত মিলাতে চলেছে একটি বেসরকারি সংস্থাও।
কলকাতায় নয়া শ্মশান
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, নতুন শ্মশানটি তৈরি হবে হেস্টিংস সংলগ্ন দহিঘাট এলাকায়। তার জন্য মোট ৯২ কাঠা জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই ক্ষেত্রটির নির্মাণের দায়িত্ব প্রথম দিকে পুরসভার হাতে থাকলেও পরে তাতে যুক্ত করা হয়েছে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। সব মিলিয়ে অত্যাধুনিক শ্মশানটি নির্মাণ করার ক্ষেত্রে খরচ হিসেবে আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মৃতদেহ সৎকার করার জন্য এই নতুন শ্মশানক্ষেত্রে দুটি পরিষেবাই কার্যকর করা হবে। একদিকে থাকবে পাঁচটি কাঠের চুল্লি, অন্যদিকে থাকবে পরিবেশবান্ধব দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি। জানা গিয়েছে শ্মশানের নির্মাণকাজ শেষ হলে তা পরিচালনার জন্য কলকাতা পুরসভার হাতে দায়িত্ব দেওয়া হলেও রক্ষণাবেক্ষণ এবং দৈনন্দিন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থাকবে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
কাজ সম্পূর্ণ হতে সময় লাগবে দু’বছর
কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ৩০ বছরের জন্য এই জমি কলকাতা পুরসভাকে ইজারাও দিয়েছে। আসলে কলকাতার জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শহরের শ্মশানগুলোর উপর চাপ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে কালীঘাটের কেওড়াতলা মহাশ্মশানের উপর চাপ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তাই প্রথমে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও পুরসভার যৌথ উদ্যোগে শ্মশান নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু নানা প্রশাসনিক জটিলতায় সেই কাজ সম্পূর্ণ হতে দেরি হচ্ছিল। পরে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শ্মশান নির্মাণের দায়িত্ব নেওয়ার আর্জি জানায়। সম্প্রতি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে পুরসভা। সেক্ষেত্রে এই কাজ সম্পূর্ণ হতে প্রায় দু’বছর সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন পুরসভার আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের নির্দেশে অনুদান বন্ধ! এবার পুজো হওয়া নিয়ে আশঙ্কা শিলিগুড়ির কাশ্মীর কলোনির
নয়া শ্মশানক্ষেত্র নির্মাণ নিয়ে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, “শ্মশানগুলোর ওপর চাপবিজেন দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। অনেক সময় মৃতদেহ সৎকারের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। তাতে অনেকেই বিরক্ত হন। তাই নতুন শ্মশান চালু হলে এই চাপ অনেকটাই কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে। মৃতদেহ সৎকারের প্রক্রিয়াও দ্রুত হবে।” ন’নম্বর বোরোর চেয়ারপার্সন দেবলীনা বিশ্বাস জানান, “বড় গঙ্গার ধার বরাবর এই শ্মশান তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে শীঘ্রই কাজ শুরুর দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে।” প্রসঙ্গত নির্মাণকাজ শেষ হলে এখানে একসঙ্গে সাতটি দেহ সৎকার করা সম্ভব হবে। ফলে কালীঘাটের কেওড়াতলা মহাশ্মশানের উপর চাপ অনেকটাই কমে যাবে।