উদ্ধার দেশরাজের প্রাণ ভোমরা! কৃষ্ণনগরের তরুণী ঈশিতা খুনে বড় তথ্য পেল পুলিশ

Krishnanagar Death Case

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কৃষ্ণনগরে হত্যাকাণ্ডে (Krishnanagar Death Case) নিহত ছাত্রী ঈশিতা মল্লিকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। আর তাতেই মাথায় তিন তিনটি আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷ কিন্তু খোঁজ মেলেনি খুনি দেশরাজ সিংয়ের। তবে তাঁকে খুঁজে না পাওয়া গেলেও উদ্ধার হয়েছে দেশরাজের মোবাইল। আর তাতেই উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

উদ্ধার হল দেশরাজের ফোন

উল্লেখ্য গত সোমবার অর্থাৎ ২৫ আগস্ট, ভরদুপুরে কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ায় বাড়ির দোতলায় উঠে ঘরের ভিতরে প্রথম বর্ষের ছাত্রী ঈশিতা ঘোষকে গুলি করে খুন করে তাঁর প্রেমিক দেশরাজ সিং৷ গুলি করার পরেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় যুবক। এরপর ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করার পরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। সেখানকার প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ঈশিতার মাথায় তিনটি গুলির আঘাত মিলেছে৷ মাথার ডান দিকে দুটি এবং মাথার পিছন দিকে গুলির আঘাত রয়েছে৷ নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পর চব্বিশ ঘণ্টার বেশি পেরিয়ে গেলেও এখনও অভিযুক্ত দেশরাজ সিংয়ের খোঁজ পায়নি পুলিশ৷ এমতাবস্থায় উদ্ধার হয়েছে দেশরাজের নতুন সিম সহ মোবাইল। আর তাতেই একের পর এক তথ্য বেরিয়ে এল।

সবটাই ছিল দেশরাজের পরিকল্পনা!

নিউজ ১৮ বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী এবং পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, দেশরাজ সিং পুরনো সিম কাচড়াপাড়াতেই খুলে রেখে মোবাইলে নতুন সিম ভরেছিল। ভেবেছিল এই প্রক্রিয়ায় পুলিশ তাঁর লোকেশন ট্র্যাক করতে পারবে না। খুনের পর হাওড়া স্টেশন থেকে দুন এক্সপ্রেসে বরাকর যায় সে এবং স্টেশনেই সিম সহ মোবাইল ফেলে দেয়। বরাকর থেকে ফের আসানসোল ফিরে এসে সাড়ে ১২টা নাগাদ এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে উত্তর প্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। এদিকে ফেলে দেওয়া ওই মোবাইল কুড়িয়ে পান এক ব্যক্তি। শেষে তাঁর কাছ থেকেই মোবাইল উদ্ধার হয়। ইচ্ছে করেই চালাকির সঙ্গে সে স্টেশনের জনবহুল এলাকায় মোবাইল ফেলে দিয়েছিল যাতে কোনও ব্যক্তি সেই মোবাইল পাক এবং পুলিশের লোকেশন ধরতে বিভ্রান্তির মুখে পড়তে হয়।

আরও পড়ুন: আরজি কর মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ! নেপথ্যে কী কারণ?

পুলিশ জানতে পারে যে দেশরাজ সিং তাঁর এই নতুন নম্বরের সিম দিয়ে কাচড়াপাড়ার দুই বন্ধুকে ফোন করে আশ্রয় চেয়েছিল। এমনকি তার মা ও এক ভাইকেও নতুন নম্বর দিয়ে ফোন করেছিল। পুলিশ মোবাইলের IMEI নম্বর থেকে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে মোবাইল উদ্ধার করেছে। এদিকে পুলিশ ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে, ২০২২ সালে নিজের সহপাঠীকে মারধরের ঘটনায় দেশরাজকে কাঁচরাপাড়ার স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল৷ কাঁচরাপাড়ায় ঈশিতারও সহপাঠী ছিল এই দেশরাজ৷ সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে ঈশিতার ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল৷ কিন্তু ঈশিতা দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় পাশ করার পরই ওই ছাত্রীকে কৃষ্ণনগরের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায় তাঁর পরিবার৷

কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ায় যেভাবে সোমবার দুপুরে বাড়িতে ঢুকে ঈশিতাকে খুন করেছে দেশরাজ, তাতে দু জনের মধ্যে গোপনে যোগাযোগ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ যদিও এই নিয়ে এখনও কোনো নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যায়নি ৷ কিন্তু পরিবার না চাইলেও কি গোপনে দেশরাজের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল ঈশিতা তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। আর সবটা নিয়ে তদন্ত খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷

Leave a Comment