সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ট্রাম্পের 50% শুল্কের (Trump Tariff) জেরে বিরাট ধাক্কা খেয়েছে ভারত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে অজুহাত দেখিয়ে হোয়াইট হাউস যে বাণিজ্য বোমা ফেলেছে, তার প্রভাব সরাসরি পড়েছে ভারতের রপ্তানি শিল্প থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানে। রিপোর্ট বলছে, 5.4 লক্ষ কোটি টাকার রপ্তানি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। আর এর ফলে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার 0.4 থেকে 0.6% পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।
তবে ভারত তো চুপ থাকার পাত্র নয়! হ্যাঁ, কোনোদিন থাকেওনি, আর থাকবেও না। বরং বিপর্যয়ের ভিতর থেকেও সুযোগ খুঁজে নিয়েছে দিল্লি! আর এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। মোদীর জিএসটি সংস্কারই হতে চলেছে ট্রাম্পের ট্যারিফ আক্রমণের পাল্টা জবাব! কিন্তু কীভাবে?
আমেরিকার ট্যারিফের পাল্টা জবাব মোদীর জিএসটি
ট্রাম্প মূলত ভারতের সঙ্গে সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তিতে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে। তবে ব্যবসায়ী মহলের একাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের দাবি তুললেও দিল্লি এবার অন্য পথ বেছে নিয়েছে। কারণ প্রতিশোধ নয়, বরং দেশের ভেতরেই ক্ষত মেরামত করার পরিকল্পনা এঁটে ফেলেছে কেন্দ্র সরকার।
নয়া জিএসটি সংস্কার
প্রসঙ্গত, গত 15 আগস্ট লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, জিএসটি কাঠামোতে এবার বড়সড় পরিবর্তন আনা হবে। বর্তমানে 5%, 12%, 18% এবং 28% এই চারটি স্ল্যাব একত্রিত হয়ে মূলত দুটি স্ল্যাব থাকবে। আর সেগুলি হল 5% এবং 18%।
🚨 BREAKING. Next Gen GST Reforms to be announced in Diwali 🔥
~ PM Modi declares: “Taxes on Daily Public Need items will be SLASHED Massively.”👏🏼GOOD News for the public on #IndependenceDay. Modi sets the tone🎯 pic.twitter.com/wK6uqKE1Lm
— The Analyzer (News Updates🗞️) (@Indian_Analyzer) August 15, 2025
এর ফলে জিনিসপত্র অনেকটাই সস্তা হবে, পাশাপাশি বাজারে কেনাকাটা বাড়বে। এমনকি জিনিসের দাম কমলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। ফলে দেশীয় বাজারে চাহিদা হু হু করে বাড়বে এবং ভারতীয় পণ্যের আর রপ্তানির জন্য নির্ভর করতে হবে না।
ট্যারিফ বনাম জিএসটি
সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, জিএসটি সংস্কারের ফলে দেশীয় ভোক্তা ব্যয় 1.98 লক্ষ কোটি টাকা বাড়বে। এদিকে সরকারের রাজস্বের ক্ষতি হবে আনুমানিক 85 হাজার কোটি টাকা। তবে তার থেকে বেশি লাভবান হবে দেশের অর্থনীতি। হিসাব বলছে, এই সংস্কারের ফলে জিডিপি অন্তত 0.6% বাড়বে। অর্থাৎ ট্যারিফের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে, তা দেশীয় বাজারে বাড়তি চাহিদা পূরণ করে দেবে।
আরও পড়ুনঃ মাসে ৫০০০ টাকা, শ্রমশ্রী পেতে কর্মসাথীতে নাম তোলার হিড়িক! কীভাবে করবেন আবেদন?
এদিকে রপ্তানি কমে গেলে কোম্পানিগুলি আমেরিকায় পাঠানো পণ্য দেশীয় বাজারেই বেশি বিক্রি করতে চাইবে। আর এতে সরবরাহ বেড়ে দাম আরো কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ সস্তায় পণ্য পাবে এবং বাজারে কেনাকাটার প্রবণতা আরো বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অর্থাৎ, ট্রাম্পের ট্যারিফ ভারতীয়দের কাছে এক প্রকার আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে।