প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গ্রামে গ্রামে রাস্তা নির্মাণের গুণমান বজায় রাখতে জেলাশাসকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্য সচিব। পথশ্রী প্রকল্পের অধীনে তৈরি হওয়া রাস্তাগুলির মান নিয়ে কোনোভাবেই যাতে আপোষ না করা হয় সেই নিয়ে বেশ কড়াকড়ি করা হয়েছিল। এবার নবান্নের তরফে পথশ্রী প্রকল্পের গুণমান যাচাই করার জন্য নেওয়া হল এক নয়া এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জানা গিয়েছে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নবান্ন (Nabanna) এবার পথশ্রী প্রকল্পের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে চলেছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি।
পথশ্রী প্রকল্পের ক্ষেত্রে নয়া ভাবনা নবান্নের
বর্তমান সময়ে AI বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যত বড় কাজ হোক না কেন নিমেষের মধ্যেই সেই কাজ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করে ফেলার কাজ ভালোভাবে পালন করে AI। তাই সেই কথা মাথায় রেখেই এবার নবান্ন AI প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দিল পথশ্রী প্রকল্পের ক্ষেত্রে। জানা গিয়েছে, রাস্তা নির্মাণ চলাকালীন প্রতিটি স্তরের ছবি তুলে আপলোড করতে হবে নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে। এরপর সেই ছবি বিশ্লেষণ করেই কাজের গুণগত মান যাচাই করবে AI। যদি কোথাও নিম্নমানের সামগ্রী বা কাজে গাফিলতি ধরা পড়ে তখন সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক-এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চারটি পর্যায়ে চলবে যাচাইকরণ
রিপোর্ট অনুযায়ী শীঘ্রই বাংলাজুড়ে শুরু হবে ১৫ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজ। তাই সেই কারণে দ্রুত গতিতে টেন্ডার ডাকার কাজ শুরু হয়েছে। আর তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ার্ক অর্ডার ইস্যু হবে। রাস্তা নির্মাণে কাজের গুণমান বজায় রাখতে ৩০ জন স্টেট কোয়ালিটি মনিটর থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত দপ্তরের পদস্থ কর্তাব্যাক্তি ও ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ করা হবে। রাস্তা তৈরির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোট চারটি পর্যায়ে যাচাইয়ের প্রয়োজন পড়ে। প্রতিটি স্তরেই দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে রিপোর্ট তুলতে হবে অ্যাপে। তার সঙ্গে তাঁদের স্বাক্ষরিত একটি ‘ইন্সপেকশন রিপোর্ট’ও জমা দিতে হবে অনলাইনে।
আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকা বেড়ে হবে ২৫০০!’ বড়সড় ইঙ্গিত খোদ সরকার পক্ষের
নবান্নের নয়া এই AI পদক্ষেপ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আগে একেবারে হাতে হিসেব কষে এই কাজ করতে হত আধিকারিকদের। যা ছিল যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। তবে এবার এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যাচাই করার ফলে দ্রুত কাজের গুণমান সংক্রান্ত রিপোর্ট চলে আসবে পঞ্চায়েত দপ্তরের পদস্থ কর্তাদের হাতে। বড় সমস্যা মিটবে।’ এছাড়াও, নবান্নে তরফে জানানো হয়েছে রাস্তা নির্মাণ সামগ্রীর গুণমান পরীক্ষা করা হবে কল্যাণীতে অবস্থিত পঞ্চায়েত দপ্তরের ল্যাবরেটরিতে। উপস্থিত থাকবেন একাধিক আইটিআই, পলিটেকনিক ইঞ্জিনিয়ারেরা।