প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনের বছরই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকেই জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে। আর এই আবহে ফের CAA নিয়ে রাজনীতির উত্তাপ চরমে উঠল। বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এল বনগাঁর তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের নাম। সম্প্রতি একটি সভায় তিনি জানান, কেউ যদি CAA-তে আবেদন করেন, তাহলে তাঁর লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ সমস্ত সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হতে হবে। আর সেই মন্তব্য ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
CAA নিয়ে সরগরম পরিস্থিতি
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফার মোদি সরকারের সময় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধন আইন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪-র আগে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়। এমতাবস্থায় বাংলায় গত কয়েকদিন ধরেই উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্তবর্তী এলাকা CAA নিয়ে সরগরম পরিস্থিতি তৈরি হয়। ২৪ জুলাই বাগদার চোয়াটিয়া বাজারে CAA নিয়ে অনলাইনে আবেদন করার জন্য বিজেপির তরফে একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেই শিবিরের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা সৌরভ গোয়ালি।
CAA নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল নেতার
এইমুহুর্তে রাজ্যের লাখ লাখ বাসিন্দা রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকে স্বাস্থ্য সাথী থেকে শুরু করে লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা ইত্যাদি। কিন্তু এই সুবিধা ব্যবহার করা নিয়ে এবার সাবধান বাণী দিলেন বনগাঁ তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ। আজতক বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি এই বিষয়ে বলেন যে, “যারা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA-র জন্য আবেদন করছেন, নিজেদের বাংলাদেশী বলে দাবি করছেন, তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। কারণ, কোনও বাংলাদেশী নাগরিক ভারতীয় সুবিধা পাবেন না। কারণ যখনই নিজেকে বাংলাদেশী বলবেন, তখন সমস্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও শর্ত ছাড়াই নাগরিকত্ব দেওয়ার পক্ষে সোচ্চার।”
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসের আগেই বাংলায় ছুটবে প্রথম এসি লোকাল ট্রেন, দিনক্ষণ চূড়ান্ত করল পূর্ব রেল
উল্লেখ্য, CAA আবেদন নিয়ে রাজ্যে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কীভাবে কোন ক্ষেত্রে এই পন্থা জারি করা হবে তাই নিয়ে নানারকম আলোচনা চলছে। আর এই আবহে তৃণমূল নেতার মন্তব্য সেই বিভ্রান্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে অনেকে মনে করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। যদিও বিজেপির তরফে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে যে, এই আইনের মাধ্যমে বহু বছর ধরে ভারতে বসবাসকারী হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পাবেন।