DA মামলায় রাজ্য সরকারের উপর জোড়া চাপ! দায়ের দু’দুটি আদালত অবমাননার অভিযোগ

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে সরকারি কর্মীদের DA বা মহার্ঘ ভাতার ঝঞ্ঝাট যেন কিছুতেই কাটছে না। যার জেরে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধতা যেন বেড়েই চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেই মিলছে না পর্যাপ্ত মহার্ঘ ভাতা, যা নিয়ে তুলকালাম কর্মী সংগঠনের মধ্যে। রাজ্য সরকারের দায়ের করা মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন এবং সুপ্রিম কোর্টে নতুন আবেদনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। আর এই আবহে এবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।

সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা

গত ২ জুলাই অর্থাৎ বুধবার, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ। সুপ্রিম কোর্টের রায় না মানায় একাধিক অভিযোগ তুলে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল তবে, এই মামলায় একটি ছোটো ভুল নজরে এসেছিল। আর তা হল রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পান্থের নাম ভুলবশত মণীশ পান্থ লেখা হয়েছিল।

তাই শীঘ্রই মামলার আবেদন সংশোধনের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত ২১ জুলাই অর্থাৎ সোমবার সরকারি কর্মচারী পরিষদের তরফে মুখ্যসচিব মনোজ পান্থের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়।

কবে হবে শুনানি?

যদিও এখনও এই নতুন মামলাগুলির জন্য আলাদা করে শুনানির দিন ধার্য করা হয়নি। এদিকে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট আগামী ৪ আগস্টের জন্য শুনানির তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে ৬৯ নম্বরে স্থান পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বকেয়া DA মামলাটি। তাই সেক্ষেত্রে আশা করা যাচ্ছে ওই দিনই বকেয়া ভাতা সংক্রান্ত পারিপার্শ্বিক মামলাগুলির শুনানি হবে। এমনকি সম্প্রতি এই মহার্ঘ ভাতা কে ঘিরে যে দুটি আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে সেই মামলা দুটিও একই দিনে শুনানি হবে। যার উত্তরে একাধিক সমস্যার সমাধান হবে।

কী বলছেন মলয় মুখোপাধ্যায়?

এদিকে কিছুদিন আগে ভিনরাজ্যে বাঙালিদের অত্যাচারের প্রসঙ্গে পথে নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গোটা দল। ভাষা, সম্প্রদায় নিয়ে রীতিমত বিরোধীদলকে তুলোধোনা করেছিলেন। আর এই প্রসঙ্গে এবার কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িসের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান যে এসব করে বাঙালির কোনো সমস্যার সমাধান হবে না, উল্টে মমতার এই মিছিল আসলে আরও ৫ বছর রাজত্ব করার ভিত্তি গড়ে তুলেছে। সেক্ষেত্রে তাই সরকারের বিরোধিতা করতে মিটিং মিছিল নয় আইনি ব্যবস্থা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি এদিন আরও বলেন যে, “ রাজ্য সরকার একের পর এক পরস্পর বিরোধী মন্তব্য করে চলেছেন। যেটা কিনা একদমই কর্মী সংগঠনের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। যদি সরকারি কোষাগারে কর্মীদের দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ভাতা বা DA না থাকে তাহলে সরকার নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে ছেড়ে দিক। কাড়ি কাড়ি টাকা লোটার জন্য বসে থাকলে চলবে না। এটা কোনো সরকার বা এটা কোনো দল?”

আরও পড়ুন: মমতাকে নিয়ে লেখা দীপক ঘোষের বই ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা বারাসত আদালতের

নজরে ৪ আগস্ট

অন্যদিকে রাজ্য সরকারি কর্মচারী কনফেডারেশন স্পষ্ট জানিয়েছে যে তারা রাজ্য সরকারের দায়ের করা মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশনটিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করবে। কারণ তাদের মতে, এই অ্যাপ্লিকেশনটি আসলে মামলা বিলম্বিত করার একটি প্রশাসনিক কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই সেক্ষেত্রেমূল ফোকাস বা টার্গেট এখন ৪ আগস্ট।

কারণ সেদিনেই বোঝা যাবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে। জানা গিয়েছে, এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি হবে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার সমন্বিত বেঞ্চে।

Leave a Comment