২রা নভেম্বর ২০২৫ সাল। ১৩ তম ICC Women’s World Cup-এ দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে নিজেদের প্রথম ওয়ার্ল্ড কাপ জিতে নিল ভারতীয় দল। হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বে ভারতীয় দল যে শুধু প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছে তাই নয়, জিতে নিয়েছে দেড়শো কোটি দেশবাসীর মনও। আর এই ফাইনালে ওয়ার্ল্ড কাপ নেওয়ার আগে দেখা গেল এক অভিনব ঘটনা।
৩৬ বছর বয়সী হরমনপ্রীত কৌরকে ওয়ার্ল্ড কাপ তুলে দিচ্ছেন ৩৭ বছর বয়সী ICC চেয়ারম্যান জয় শাহ (Jay Shah), আর ঠিক তখনই হাত মেলানোর পাশাপাশি জয় শাহের পা ছুঁয়ে প্রনাম করতে দেখা যায় হরমনপ্রীতকে। বয়সের পার্থক্য খুব বেশি না হওয়ার পরেও এই ধরনের সম্মান হঠাৎ করে কেন দিলেন হরমনপ্রীত?
১৯৮৩ সালে ছেলেদের যে স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন কপিল দেব, ৪২ বছর পর মেয়েদের সেই একই স্বপ্ন দেখানোর অনুপ্রেরণা যোগালেন হরমনপ্রীত কৌর।
ভাবুন তো, একদিকে যখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন বাঙালি অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি, বলেছিলেন – মেয়েদের ক্রিকেট খেলার কোনও দরকার নেই। বলেছিলেন নিজের মেয়েকেও দেবেন না ক্রিকেট খেলতে।
আবার BCCI-এর প্রাক্তন সভাপতি শ্রীনিবাসন বলেছিলেন, আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে মেয়েদের ক্রিকেট বন্ধ করে দিতাম।
আজ অন্যদিকে, ভারতের সেই মেয়েরাই জিতে নিল ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ। আবার ভাগ্যের পরিহাস দেখুন – এই দলেই রয়েছে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী বাঙালী।
তবে কি এই পরিবর্তন এসেছে একদিনে? এক দিনেই কি সোনার ইতিহাস লিখে ফেলল ভারতের মেয়েরা? না, এর পিছনে রয়েছে বহু বছরের তপস্যা। রয়েছে মহিলা ক্রিকেটারদের কঠোর পরিশ্রম। কিন্তু, এই অসম্ভব সম্ভব হতো না, যদি না নেপথ্যে থাকতেন আরও একজন ব্যাক্তি!
যিনি জীবনে কোনোদিন ক্রিকেট খেলেননি,
বাবা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে পেয়েছেন নেপোটিজমের তকমা,
কথা বলার জন্য, শরীরের জন্য বারবার হয়েছেন ট্রোল।
হ্যাঁ আমরা কথা বলছি – জয় শাহকে নিয়ে, যিনি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে।
আমরা আজ আপনাকে জানাবো, কেন হঠাৎ করে বিশ্বকাপ নেওয়ার আগে জয় শাহের পা ছুঁলেন হরমনপ্রীত? ভারতীয় ক্রিকেটে মহিলাদের জন্য কী এমন করেছেন জয় শাহ? যেখানে অনেকেই বলেন তিনি BCCI-এর সচিব হওয়ার যোগ্য নন, তবুও কেন তাঁকে চেয়ারম্যান করল ICC? আজ India Hood ডিকোডে আপনাদের কাছে তুলে ধরবো এমন কিছু তথ্য, এমন কিছু ঘটনা, যা বদলে দেবে আপনার সম্পূর্ণ ধারণা
BCCI থেকে ICC – করেছেন লম্বা যাত্রা!
সালটা ২০০৯, আহমেদাবাদের সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ক্রিকেটের কার্যনির্বাহী বোর্ড সদস্য হিসাবে নিযুক্ত হন জয় শাহ। এরপর ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি হন গুজরাত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব। এই সময়ে তিনি নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের দায়িত্ব নেন।
২০১৫ সালে, তিনি প্রথমবার BCCI-এ যোগ দেন একজন ফিন্যান্স এবং মার্কেটিং কমিটির সদস্য হিসাবে।
এরপর ২০১৯ এবং ২০২২ সালে পরপর দুবার BCCI-এর সচিব হিসাবে নির্বাচিত হন জয় শাহ। এবং ২০২৪ সালের ১লা ডিসেম্বর থেকে তিনি ICC-র সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন।
আর এই সময়কালেই তিনি ভারতীয় ক্রিকেটে করেছেন বেশ কিছু অসাধ্য সাধন। নিয়েছেন এমন কিছু বড় বড় পদক্ষেপ যা ভোল বদলে দিয়েছে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের।
ঠিক কী কী করেছেন জয় শাহ? আজ এক এক করে আমরা তুলে ধরবো আপনাদের সামনে।
প্রথমত, সমান-সমান বেতন
বরাবরই ভারতীয় ক্রিকেটে পুরুষ ও মহিলাদের সমতার কথা মুখে বললেও, বেতনে ছিল বিস্তর ফারাক।
- যেখানে টেস্ট ফরম্যাটের প্রতিটি ম্যাচে পুরুষ ক্রিকেটাররা পেত ১৫ লক্ষ টাকা, সেখানেই মহিলা ক্রিকেটাররা পেত ৪ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ ব্যবধান প্রায় ১১ লক্ষ।
- যেখানে ওয়ানডে ফরম্যাটের প্রতিটি ম্যাচে পুরুষ ক্রিকেটাররা পেত ৬ লক্ষ টাকা, সেখানেই মহিলা ক্রিকেটাররা পেত ১ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ ব্যবধান প্রায় ৫ লক্ষ।
- যেখানে টি২০ ফরম্যাটের প্রতিটি ম্যাচে পুরুষ ক্রিকেটাররা পেত ৩ লক্ষ টাকা, সেখানেই মহিলা ক্রিকেটাররা পেত ১ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ ব্যবধান প্রায় ২ লক্ষ।
অর্থাৎ, একই ফরম্যাটে খেলার জন্য মহিলা ক্রিকেটাররা পুরুষদের তুলনায় প্রায় ৪ থেকে ৫ গুণ কম পারিশ্রমিক পেতেন।
অন্যদিকে, বার্ষিক বেতনেও ছিল বিস্তর পার্থক্য। কেন্দ্রীয় চুক্তি অনুযায়ী, পুরুষদের ক্রিকেটে –
- গ্রেড A+ ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৭ কোটি টাকা।
- গ্রেড A ক্রিকেটারদের জন্য ৫ কোটি টাকা।
- গ্রেড B ক্রিকেটারদের জন্য ৩ কোটি টাকা।
- গ্রেড C ক্রিকেটারদের জন্য ১ কোটি টাকা।
আবার এই একই চুক্তিতে, মহিলা ক্রিকেটারদের ছিল তিনটি স্তর,
- গ্রেড A ক্রিকেটাররা পেতেন ৫০ লক্ষ,
- গ্রেড B ক্রিকেটাররা পেতেন ৩০ লক্ষ, এবং
- গ্রেড C ক্রিকেটাররা পেতেন ১০ লক্ষ।
অর্থাৎ, এখানেও পুরুষ ক্রিকেটাররা মহিলাদের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি আয় করতেন।
এর কারণ হিসাবে অনেকেই মহিলা ক্রিকেটের ম্যাচ সংখ্যা কম হওয়ার, কিংবা টেলিভিশন সম্প্রচার ও স্পনসরশিপ থেকে কম টাকা আসার মতো কারণকে দায়ী করলেও কেউই কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
অবশেষে, ২০২২ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর জয় শাহ এক বড় ঘোষণা করেন, “ভারতের মহিলা ক্রিকেটাররা এখন থেকে পুরুষ ক্রিকেটারদের মতোই সমান ম্যাচ ফি পাবেন।” অর্থাৎ প্রতিটি ম্যাচে তারা পুরুষদের মতো সমান টাকা পাবেন। সেই সময়ে শচীন তেন্ডুলকর সহ অনেকেই জয় শাহের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিলেন।
দ্বিতীয়ত, ডোমেস্টিক ক্রিকেটেও ফিরিয়ে আনেন সমতা
BCCI সচিব হওয়ার পর থেকেই, পুরুষ ও মহিলাদের ক্রিকেট দুটোকেই সমানভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্রতী হন জয় শাহ। সেই লক্ষ্যে ২০২০-২১ সালে, Covid-19-এর কারণে যাদের ম্যাচ হয়নি, তাদের জন্য ৫০% ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। সিনিয়র স্তরে ম্যাচ ফি ৫০% পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঘরোয়া টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী মহিলা খেলোয়াড়দের জন্য ম্যাচ ফি পুরুষদের সমান করা হয়।
ছোট থেকেই যাতে মেয়েরা ক্রিকেটের দিকে এগিয়ে যায়, বা ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসাবে বেছে নেয়, সেই জন্য জয় শাহ ঘরোয়া ক্রিকেটকে দিয়েছেন এক অত্যাধুনিক রূপ।
২০২২ সালে জয় শাহের নেতৃত্বে ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য চালু করা হয় Women’s Under-15 One Day Tournament। তাঁর নেতৃত্বেই মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য আলাদা কোচিং, ফিটনেস ও ট্রেনিং প্রোগ্রাম চালু করা হয়। শুরু করা হয় মহিলা কোচদের জন্য CPD ট্রেনিং প্রোগ্রাম। রাজ্যভিত্তিক মহিলা লিগের সময়সূচী আগে ছিল অনিয়মিত, এখন তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। চালু করেছেন বেশি ম্যাচ, ভালো সুযোগ-সুবিধা, উন্নত থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। মহিলা আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি ও অফিসিয়াল নিয়োগে উৎসাহ দেওয়া শুরু করেন তিনি। পিচ কিউরেটরদের যোগ্য সম্মান দিয়ে, যুগিয়েছেন মেয়েদের এগিয়ে আসার অনুপ্রেরণা। যাতে দেশের প্রতিটি ঘরের মেয়েরা উৎসাহ পায় ক্রিকেটের জগতে আসার।
এমনকি জয় শাহ সরাসরি Senior Women’s One Day Trophy-র নির্বাচন পদ্ধতি, খেলোয়াড় কল্যাণ, এবং পুরস্কার কাঠামো-তে পরিবর্তন নিয়ে আসার মাধ্যমে এই টুর্নামেন্টকে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও মর্যাদাপূর্ণ করার কাজ করেছেন।
২০২৪ সালের ২৬শে আগস্ট, জয় শাহ পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা এবং জুনিয়র ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জন্য প্রাইজ মানির ঘোষণা করেন। মূলত ঘরোয়া ক্ষেত্রে অসাধারণ পারফরম্যান্সকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং পুরস্কৃত করার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর ফলে স্থানীয় স্তরে মহিলা খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হতে পারে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ২০২৪-২৫ মরসুমে রঞ্জি ট্রফিকে দুই ধাপে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাতে ম্যাচগুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত বিরতি থাকে এবং খেলোয়াড়রা শারীরিক বিশ্রাম পায়। পাশাপাশি দেশের সমস্ত খেলোয়াড়দের রঞ্জি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করার সুনিশ্চিত বার্তা দেন তিনি। জানিয়ে দেন – কিছু খেলোয়াড় ঘরোয়া ক্রিকেটের চেয়ে আইপিএলকে অগ্রাধিকার দেওয়া শুরু করেছে। যেটা আশা করা যায় না। ভারতের হয়ে খেলতে আগ্রহী প্রত্যেক ক্রিকেটারকে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স, নির্বাচনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ না করলে এর প্রভাব ক্রিকেটারদের কেরিয়ারে পড়বে। অর্থাৎ তিনি শুধু মহিলাদের উন্নতির দিকে চোখ দিয়েছেন তা নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটের গুরুত্বও তুলে ধরেছেন।
তৃতীয়ত, উইম্যান্স প্রিমিয়ার লীগ অর্থাৎ WPL
২০০৮ সালে শুরু হয়েছিল IPL, যার পর থেকেই ক্রিকেটের প্রতি উৎসাহ বহুগুণ বেড়ে যায় প্রতিটি যুবকের। ভারতীয় দল কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অনামী ক্রিকেটারদের জন্য এক বিরাট মঞ্চ হিসাবে উঠে আসে এই টুর্নামেন্ট। যেখানে বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিক তো পাওয়া যেতই, সাথে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ।
কিন্তু মেয়েদের জন্য ছিল না তেমন কোনও সুযোগ। এরপর ২০২৩ সালে জয় শাহের নেতৃত্বে প্রথমবারের জন্য শুরু হয় WPL অর্থাৎ উইম্যান্স প্রিমিয়ার লীগ। শুধু তাই নয়, WPL-এর প্রথম মরসুমের নিলাম, পুরুষদের IPL-এর প্রথম মরসুমের নিলামের রেকর্ডকেও ছাপিয়ে যায়।
তবে, তিনি যে শুধু মেয়েদের দিকেই নজর দিয়েছেন তা নয়। ২০২২ সালে, জয় শাহ BCCI-এর রেকর্ড ভাঙা IPL মিডিয়া রাইটসের চুক্ত করেন, যেখানে লিগের পাঁচ বছরের রাইট অর্থাৎ IPL দেখানোর অধিকার বিক্রি হয় মোট ৪৮,৩৯০ কোটি টাকায়, যা IPL-কে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক ধনী ক্রীড়া লীগে পরিণত করে।
চতুর্থত, Asian Cricket Council-এও মহিলাদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত
ACC-র সভাপতি থাকার সময়ে তাঁর নেতৃত্বে এশিয়া কাপের বাণিজ্যিক রাইট বা অধিকার রেকর্ড মূল্যে বিক্রি হয়। এছাড়া এশিয়ায় মহিলা ক্রিকেটের বিস্তার ঘটাতে বেশ কিছু টুর্নামেন্ট চালু করেন তিনি। ২০২২ সালে তিনি পুনরায় ACC মহিলা টি-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করেন, এবং ২০২৪ সালে প্রথমবারের জন্য ACC U-19 মহিলা টি-২০ এশিয়া কাপ এর ঘোষণা করেন। এই টুর্নামেন্টগুলো এশিয়ার নতুন মহিলা প্রতিভাদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে আনার জন্য এবং তাদের অনুপ্রেরণা যোগাতে যথেষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
পঞ্চমত, ICC-তেও মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে করে যাচ্ছেন কাজ
কেবল ভারত বা এশিয়া স্তরে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও যাতে মহিলারা ক্রিকেট খেলতে এগিয়ে আসেন সেই জন্যও নিয়েছেন একাধিক পদক্ষেপ।
ICC চেয়ারম্যান হিসেবে জয় শাহের উদ্যোগে ICC মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫-এর মোট পুরস্কার মূল্য ১১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৯.৭৮ কোটি করা হয়েছে, যা প্রায় ৩০০%-র বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমনকি এই অর্থ ২০২৩ সালে পুরুষদের বিশ্বকাপের চেয়েও প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা বেশি।
শুধু তাই নয়, ICC-র চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই তিনি International Olympic Committee-র সাথে একাধিক মিটিং করেন, এবং Los Angeles 2028 অলিম্পিক্সে পুরুষ ও মহিলাদের ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন।
এখানেই শেষ নয়। ICC-র সঙ্গে মিলিতভাবে, জয় শাহ একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করেন আফগানিস্তানের বিতাড়িত মহিলা ক্রিকেটারদের সাহায্যের জন্য। এই উদ্যোগের মধ্যে অর্থ সহায়তা, উন্নত প্রশিক্ষণ, উচ্চ পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম এবং মেন্টরশিপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এছাড়াও ২০২২ সালে প্রাক্তন ক্রিকেটার ও আম্পায়ারদের মাসিক পেনশন ৪০-২০০% বৃদ্ধি করেছেন তিনি।
২০২৩-২৪ থেকে টেস্ট ক্রিকেটে উৎসাহ দিতে টেস্ট ইনসেনটিভ স্কিম চালু করেন তিনি। যেখানে অধিক টেস্ট খেললে অধিক পারিশ্রমিক পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এতক্ষণ গেল ভারত তথা বিশ্বের মহিলা ক্রিকেটের উন্নতির কথা। কিন্তু তিনি ভারতীয় হিসাবে অনবদ্য দেশপ্রেমী হওয়ারও প্রমাণ দিয়েছেন ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সর্বশেষ ভ্যেনু পাকিস্তান নির্ধারণ করা হলেও, আরও একটি নিরপেক্ষ ভেন্যু তিনি ঠিক করেন ভারতের জন্য। এছাড়াও, তিনি ভবিষ্যতে ভারত ও পাকিস্তানের সমস্ত টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রে ICC ইভেন্ট ‘হাইব্রিড’ মডেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অর্থাৎ, ভারত ও পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোনও দেশে খেলা হবে।
আজ আমরা আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম সেই সমস্ত তথ্য ও বিশ্লেষণ যা সাধারণত অন্যান্য মিডিয়ারা তুলে ধরে না। ভারতীয় মহিলা দলকে India Hood-এর তরফ থেকে অনেক অভিনন্দন। কিন্তু, আপনাদের কী মনে হয়, মেয়েদের এই জয়ের পিছনে জয় শাহের অবদান কতটা?