চিন, আমেরিকার পর ভারত! মহাকাশে নিজস্ব স্পেস স্টেশন বানাচ্ছে ISRO, মিলল ছাড়পত্র

Published on:

space station

দেবপ্রসাদ মুখার্জী: পৃথিবী থেকে মানবজাতি এমনকি জীব জগতের সৃষ্টির রহস্য লুকিয়ে রয়েছে মহাকাশের অন্দরে। সেই কারণে মহাকাশ গবেষণার দিকে জোর দিচ্ছে প্রত্যেকটি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ। ভারত উন্নয়নশীল দেশ হয়েও মহাকাশ গবেষণায় টক্কর দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং রাশিয়ার মতো উন্নত দেশকে। আর এবার ভারতের প্রথম মহাকাশ স্টেশন BAS-1-এর প্রথম ইউনিট তৈরির জন্য অনুমোদন দিলো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বুধবার অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি ঘোষণা করা হয় যে ২০২৮ সালে BAS-1-এর প্রথম মডিউলটি চালু হতে চলেছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত ভারতের মানব মহাকাশযাত্রা, অর্থাৎ গগনযান প্রোগ্রামের জল্পনা ও কল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, আগামী দিনে BAS-1-এর নির্মাণকার্য এবং গগনযান মিশন একইসাথে পরিচালনা করতে পারবে ISRO। যেহেতু এই দুটি মিশন একইসঙ্গে পরিচালিত হতে চলেছে, সেই কারণে এই একজোড়া মিশনের সুবিধা ও অসুবিধা পর্যালোচনা করার জন্য আরো বেশি সুযোগ ও প্রযুক্তি সহায়তা পাবেন বিজ্ঞানীরা। সেই কারণে ভারতের এই স্পেস স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত যথেষ্ট কার্যকরী প্রমাণিত হতে চলেছে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

WhatsApp Community Join Now

মহাকাশে চিন, আমেরিকার সমকক্ষ হবে ভারত

বর্তমানে, পৃথিবীর কক্ষপথে দুটি সক্রিয় মহাকাশ স্টেশন রয়েছে। যেগুলি হল – আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা ISS এবং চীনের তিয়ানগং স্পেস স্টেশন বা TSS। ISS স্টেশনটি ২০০০ সাল থেকে কার্যকর অবস্থায় কাজ করছে। এটি NASA, ROSCOSMOS, ESA, JAXA এবং CSA-র যৌথ প্রচেষ্টায় পরিচালিত হত। ISS আন্তর্জাতিক গবেষণার একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে এবং মহাকাশে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এদিকে, চিনের তিয়ানগং, গত ২০২১ থেকে কার্যকরী হয়। এটির মধ্যে ৬ জন মহাকাশচারী একসঙ্গে গবেষণা করতে পারেন। এই স্পেস স্টেশন চিনের ক্রমবর্ধমান মহাকাশ প্রোগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

নিজস্ব স্পেস স্টেশন তৈরি করছে রাশিয়া

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, রাশিয়া তাঁদের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। সূত্রের খবর, রাশিয়ার আসন্ন এই স্পেস স্টেশনের নাম রাশিয়ান অরবিটাল স্টেশন বা ROS হতে পারে। ২০০১ সালে MIR মহাকাশ স্টেশন কক্ষচ্যুৎ হওয়ার পর এটি রাশিয়া পরিচালিত দ্বিতীয় নিজস্ব স্পেস স্টেশন হিসেবে পরিগণিত হবে। জানা গেছে, ROS-এর প্রথম মডিউল ২০২৭ সালে লঞ্চ হবে, এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এটি পূর্ণ কার্যক্ষমতা অর্জন করবে।

স্পেস স্টেশন সহ ভারতের মহাকাশ পরিকল্পনা

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুমোদিত গগনযান প্রোগ্রামের লক্ষ্য হল নিম্ন পৃথিবী কক্ষপথ অর্থাৎ, LEO-তে মানুষ পরিচালিত মহাকাশযাত্রা পরিচালনা করা এবং ভবিষ্যতের ভারতীয় মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য ভিত্তি স্থাপন করা। এই মিশনের পাশাপাশি, ভারত ২০৩৫ সালের মধ্যে একটি সম্পূর্ন ভারতীয় স্পেস স্টেশন প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। এরপর ২০৪০ সালের মধ্যে একটি ক্রু-পরিচালিত চন্দ্র মিশন করতে পারে আমাদের দেশ।

মূলত কি নিয়ে গবেষণা চালাবে BAS-1?

গগনযান প্রোগ্রামের মোট বাজেট ২০,১৯৩ কোটি টাকা। এই প্রোগ্রামের অধীনে মোট ৮ টি মিশন পরিচালিত হবে, যা ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে BAS-1 মডিউল উৎক্ষেপণসহ সম্পূর্ণ হবে। ISRO এই প্রোগ্রামটির নেতৃত্ব দেবে। তবে এই মিশনে শিল্প, শিক্ষাবিদ, এবং অন্যান্য জাতীয় সংস্থাগুলির সহযোগিতা করবে। BAS-1-এর প্রতিষ্ঠা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অভিকর্ষ বল ভিত্তিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং প্রযুক্তি উন্নয়নকে বাড়িয়ে তুলবে, যা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং উদ্ভাবনের দিকে নিয়ে যাবে।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন