ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গত বছরের ২৩ অগাস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছিল চন্দ্রযান-৩। এই অবতরণের সাফল্যের ক্রেডিট অনেকটাই সঞ্চিত হয়েছিল ইসরোর প্রধান এস সোমনাথের ঝুলিতে। এই আবহের রেশ কাটতে না কাটতেই চলতি বছর অগাস্টেই আরও একটি নতুন সুখবর মিলল। এবং এই সুখবরের মাঝেই তিনি প্রমাণ করে দিলেন যে বয়স শুধুমাত্র একমাত্র সংখ্যা।
ভারতের তৃতীয় মানববিহীন চন্দ্র অভিযানের সাফল্যে ISRO চেয়ারম্যান এস সোমনাথের অবদান অনেকটাই। সেই সাফল্যকে তুলে ধরে এবং মহাকাশ বিজ্ঞানে তাঁর ভূমিকাকে সম্মান জানিয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি মাদ্রাজ বা IIT-M-এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এর তরফে ৬১ তম সমাবর্তনে এস সোমনাথের হাতে ডক্টরেট ডিগ্রির শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। পেশাগত সাফল্যের পর এবার ব্যক্তিগত জীবনেও সাফল্যের শিখরে পৌছলেন এস সোমনাথ।এবার তাঁর নামের আগে যোগ হল ডঃ উপাধি।
PhD ডিগ্রি অর্জন ISRO চেয়ারম্যানের
সূত্রের খবর, এস সোমনাথের থিসিসের নাম ছিল ‘ভাইব্রেশন রেসপন্স স্টডিস অন মডিফায়েড হাইপার ইলাস্টিক ম্যাটেরিয়াল মডেলস ফর অ্যাপ্লিকেশন অ্যারোস্পেস সিস্টেমস’। বহু প্রচেষ্টার পর অবশেষে ৬০ বছর বয়সে PhD ডিগ্রি অর্জন করলেন তিনি। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি মাদ্রাজ (IIT-M)-এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে PhD ডিগ্রি অর্জন তাঁর।এই ডিগ্রির শংসাপত্র এস সোমনাথ এর হাতে তুলে দেন IIT-M-এর ডিরেক্টর প্রফেসর ভি কামাকোটি ও IIT-M-এর বোর্ড অফ গর্ভনর, চেয়ারম্যান ড. পবন গোয়েঙ্কা।
এইমুহুর্তে দাঁড়িয়ে মহাকাশ সেক্টরে অবদানের জন্য ইসরো চেয়ারম্যানকে এখনও পর্যন্ত ১০টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু ইসরোর চেয়ারম্যানের বরাবরই একেবারে নিজস্ব গবেষণার ভিত্তিতে ডক্টরেট ডিগ্রি ধারণে ইচ্ছা ছিল। জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক ৩-এর কাজে যুক্ত থাকার সময় তিনি PhD-র জন্য নিজের নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। আর সেই দৃঢ় একাগ্রতা যখন সাফল্যের শিখর ছুঁয়েছে, তখন তাঁর মুখে ফুটে উঠেছে এক অমায়িক চওড়া হাসি।
সাফল্যের আনন্দ ভাগ করে নিলেন সোমনাথ
তিনি এদিন তাঁর এই সাফল্যের প্রসঙ্গে বলেন, ‘আজ আমার সেই যুবক বয়সের কথা বড্ড মনে পড়ছে। গ্রামের সেই ছেলেটা যখন কেরালার মধ্যে বিজ্ঞানে শীর্ষস্থান অর্জন করার পরেও IIT-র মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার সাহস পায়নি। সে আজ এত বড় কর্মকাণ্ড করে বসল। তবু স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছিলাম। তবে আমার স্বপ্ন ছিল একদিন আমি এখান থেকে স্নাতক হব। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছি। এবার আইআইটি-মাদ্রাজ থেকে PhD ডিগ্রি লাভ করলাম।’
আরও পড়ুনঃ শিয়ালদা লাইনে ২০, ২১ তারিখ বাতিল ট্রেন? মুখ খুলে বড় বয়ান দিল পূর্ব রেল
এছাড়াও তিনি বলেন, ‘PhD সবসময়ই কঠিন, বিশেষ করে তা যদি হয় IIT-M-এর মতো প্রতিষ্ঠান থেকে। দীর্ঘ যাত্রাপথ ছিল বটে। বহু বছর আগে আমি রেজিস্টার করেছিলাম। রিসার্চের বিষয় আমার খুব কাছের। আমি গবেষণা করেছি ভাইব্রেশন আইসোলেটর নিয়ে। ইসরোর ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম এক সময় । সেই সময় থেকেই এই বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করি আমি। বহু বছর ধরে এই বিষয়ে কাজ করেছি। ৩৫ বছরের পরিশ্রমের ফল এই PhD। আপনারা শেষ অধ্যায় দেখছেন। কিন্তু এ এক দীর্ঘ যাত্রাপথ।’