এবার ‘এক দেশ এক ভোট’, কবে চালু হচ্ছে? জানিয়ে দিলেন খোদ অমিত শাহ

Published on:

amit shah

প্রীতি পোদ্দার: গত ৯ জুন তৃতীয়বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দিল্লির মসনদে শপথ নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আর সম্প্রতি মোদী সরকারের তৃতীয় মেয়াদের ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। আর এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা PTI জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার এবার ‘এক দেশ এক নির্বাচন’-এর নীতি গ্রহণ করতে চলেছে। আর সরকারের এই নয়া নীতিতে NDA জোটের শরিক ও আরও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমর্থনও মিলতে চলেছে।

গত মাসে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে লালকেল্লায় ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে মুখ খোলেন। সেখানে তিনি বলেন লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আর পাশাপাশি বিভিন্ন দিনে ভোটের কারণে খরচের পরিমাণ অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। তাই প্রধানমন্ত্রী দাবি করছেন, গোটা দেশ যেন ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতিকে সমর্থন করেন। কিন্তু কবে এই নীতি চালু হবে সেই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি প্রধানমন্ত্রী। যার ফলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল NDA সরকারের চলতি মেয়াদেই কার্যকর হবে কিনা এই নীতি। এবার সেই জল্পনাতেই সিলমোহর দিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

WhatsApp Community Join Now

‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর পক্ষে সায় দিয়েছে রাষ্ট্রপতি

গত রবিবার অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর এক সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে এই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ এর নীতি বাস্তবায়নের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এবং এই নীতি বিবেচনার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েছিল মোদী সরকার। গত মার্চ মাসে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই কমিটি ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর পক্ষে সায় দিয়েছে বলেই খবর। এছাড়া, সংবাদপত্রে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। সেই বিজ্ঞপ্তির জবাবে নাকি নাগরিকদের কাছ থেকে ২১,৫৫৮টি প্রতিক্রিয়া এসেছে। তার মধ্যেও ৮০ শতাংশ এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন।

তিন স্তরের নির্বাচনের জন্য বড় পদক্ষেপ সরকারের!

পাশাপাশি ভারতের চারজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি, দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টের বারোজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবং চারজন প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সহ আইনি বিশেষজ্ঞদেরও মতামত নেওয়া হয়েছে। এই পরামর্শগুলি পাওয়ার পর, কমিটি এই নীতি স্বরূপ নির্বাচন বাস্তবায়নের জন্য এক পদ্ধতির প্রস্তাব করেছে। প্রথম ধাপে, লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনগুলিকে একত্রিত করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে, লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের ১০০ দিনের মধ্যে পৌরসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনগুলি করা হবে। জাতীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় – তিন স্তরের নির্বাচনের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ ভোটার তালিকা এবং একটি একক নির্বাচনী ফটো আইডেন্টিটি কার্ড ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে।

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতির পক্ষে বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করেছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিজেপি-বিরোধী দলগুলি মনে করছে যে, ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফলাফল দেখা যাবে যা রাজনৈতিক কাঠামো নষ্ট করবে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজ করবে বিজেপি।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন