ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: দুর্মূল্যের বাজারে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম যেখানে অনেক, সেখানে পেট্রোল ডিজেলের দাম ক্রমেই আকাশছোঁয়া হয়ে পড়ছে। এদিকে নির্বাচনের আবহে বিরোধীদের কাছে ক্রমেই যেন এই মুদ্রাস্ফীতি একটি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই জটিল সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে গোটা দেশবাসী। তবে দেশকে খানিক স্বস্তি দিতে নতুন সিদ্ধান্ত নিল ভারতের ধনীতম শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী। আমেরিকার শত্রুর সঙ্গে করলেন এক বিরাট বড় চুক্তি।
দেখতে দেখতে প্রায় দুই বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। এখনও যুদ্ধের দামামা বাজছে পূর্ব ইউরোপে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সেই যুদ্ধের প্রভাব ক্রমেই গ্রাস করছে সারা বিশ্বের অর্থনীতিকে। ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশগুলি। এবার সেই ক্ষতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে আম্বানি গোষ্ঠী হাত মেলালেন রাশিয়ার সঙ্গে।
সূত্রের খবর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমী দেশগুলি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই কারণে তারা পণ্য রপ্তানি করতে পারছিল না। ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল পাচ্ছিল। প্রথম দিকে ভারত তেলের ওপর ভালো ছাড় পেয়ে গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে অপরিশোধিত তেলের ওপর ছাড় কমেছে। অর্থাৎ আগে যেখানে রাশিয়া প্রতি ব্যারেলে ১০ ডলার ছাড় দিচ্ছিল সেখানে এখন ভারত প্রতি ব্যারেলে ৮ ডলার ছাড় পাচ্ছে। তাই রাশিয়ার সঙ্গে টানা এক বছরের চুক্তি করল Reliance। আর সেই এক বছর ধরে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত খনিজ তেল আসবে ভারতে।
চুক্তিতে কী বলা হয়েছে?
Reliance এর সঙ্গে রাশিয়ার চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনা হবে ৩০ লক্ষ ব্যারেল। অর্থাৎ, বছরে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ ব্যারেল তেল রাশিয়া থেকে ভারতে আসবে। কিন্তু সেই চুক্তির মধ্যেও রয়েছে এক বিরাট শর্ত। সেই শর্তে বলা হয়েছে, রসিয়ে রপ্তানি করা এই তেলের দাম ভারতীয় মুদ্রায় নেবে না। এমনকি আমেরিকান ডলারেও দাম দেওয়া যাবে না। আম্বানিকে এই তেলের দাম দিতে হবে রাশিয়ান মুদ্রা রুবলের মাধ্যমে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত?
আন্তর্জাতিক বাজারে গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার রাশিয়ান মুদ্রার দাম এক নাগাড়ে ধাক্কা খাচ্ছে। ফলত কমছে তার দাম। বর্তমানে তা ভারতের টাকার চেয়েও সস্তা হয়ে গিয়েছে। এক রুবল বর্তমানে ভারতের ৯৩ পয়সার সমান। তাই ভারতের টাকা বেশি দামি হওয়ায়, সেই টাকায় তেলের ব্যবসা করলে রাশিয়ার বড় একটা লাভ হবে না। সেই কারণেই পুতিন সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গিয়েছে রাশিয়ার থেকে কেনা তেলের দাম HDFC ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মেটাবেন আম্বানি। যা পৌঁছবে রাশিয়ার Gazprom Bank এ।
আরও পড়ুনঃ ‘সবটাই ষড়যন্ত্র…’ ED ডাকতেই বিস্ফোরক ঋতুপর্ণা! জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়েও দিলেন বয়ান
প্রসঙ্গত, আম্বানির নেওয়া এই সিদ্ধান্তকে দূরদর্শী ব্যবসায়ীর চিন্তাধারার পরিচয় দিয়েছে। বর্তমানে যেহেতু পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ চলছে। এবং পূর্ব ইউরোপও যুদ্ধবিধ্বস্ত। ফলে তেলের খনিসমৃদ্ধ একাধিক দেশ বিপন্ন। ফলত সব দেশে তেলের দাম যখন ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হবে, তখন আম্বানি সেই পরিস্থিতি বিচার করেই এই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছেন। এবং বিনিয়োগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে রপ্তানি করবে গোটা দেশে ভারত।