ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরের কাছে NH-8-এর উপর অবস্থিত মনোহরপুর, শাহজাহানপুর ও দৌলতপুর নামের তিনটি টোল প্লাজা দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চালকদের থেকে সড়ক কর বাবদ টাকা নিয়ে আসছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এই তিনটি টোল প্লাজা থেকে মোট ৮,৩৪৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। RTI করার ফলে যখন এই তথ্য উঠে আসে, তখন এই বিষয়টি জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ ও প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। কারণ এই রাস্তা নির্মাণে খরচ হয়েছিল মাত্র ১,৮৯৬ কোটি টাকা।
টোল প্লাজায় টাকা নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হল রাস্তা নির্মাণের জন্য বিনিয়োগ করা অর্থ পুনরুদ্ধার করা এবং রাস্তাগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা। সাধারণত টোল আদায়ের নিয়ম হলো, যখন একটি রাস্তার নির্মাণ ব্যয়ের সমপরিমাণ অর্থ টোল থেকে সংগ্রহ হয়ে যায়, তখন সেই টোল তুলে নেওয়া হয় বা আদায়ের হার কমানো হয়। কিন্তু, NH-8-এর উপর এই তিনটি টোল প্লাজার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, আদায়ের পরিমাণ প্রকল্পের আসল খরচের তুলনায় বহুগুণ বেশি হয়ে গেছে। তাও রমরমিয়ে চলছে টোল আদায়ের প্রক্রিয়া
রাস্তা নির্মান খরচের ৪.৪ গুণ টাকা আদায়
এখানে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, এই তিনটি টোল প্লাজার আদায়ের মোট অঙ্ক ৮,৩৪৯ কোটি টাকা। যেখানে রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ১,৮৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আদায়কৃত টাকা খরচের থেকে প্রায় ৪.৪ গুণ বেশি। সাধারণত, এমন অতিরিক্ত টোল আদায় হওয়ার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে, যেমন রাস্তা সম্প্রসারণ, উন্নয়ন বা দীর্ঘমেয়াদী রক্ষণাবেক্ষণ খরচ। কিন্তু এমন ব্যতিক্রমী পরিমাণ টাকা আদায় এবং টোল প্লাজায় আদায় অব্যাহত থাকার কারণে জনগণের মনে সন্দেহ তৈরি করেছে।
টোল ব্যবস্থা নিয়ে না-খুশ সাধারণ মানুষজন
অনেকেই এই টোল আদায় ব্যবস্থাকে অস্বচ্ছ এবং অন্যায্য বলে মনে করছেন। জনগণের অভিযোগ হলো, প্রকল্পের আসল খরচ উঠে যাওয়ার পরেও এই ধরনের টোল আদায় শুধুমাত্র বেসরকারি সংস্থাগুলির মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চলছে। বিশেষ করে যাঁরা নিয়মিত এই সড়ক ব্যবহার করেন, তাঁরা এই টোল প্লাজা নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সরকারের কাছে দাবি উঠেছে যে, টোল আদায়ের বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করা হোক।
সরকারের সক্রিয় পদক্ষেপ দরকার
রাজস্থানের NH-8 এর মনোহরপুর, শাহজাহানপুর ও দৌলতপুর টোল প্লাজা থেকে ৮,৩৪৯ কোটি টাকা আদায় করার বিষয়টি একটি বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে। যেখানে রাস্তা তৈরিতে খরচ হয়েছে মাত্র ১,৮৯৬ কোটি টাকা, সেখানে অতিরিক্ত এই অর্থ আদায়কে স্বচ্ছতা ও ন্যায়সংগতভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। জনগণের আস্থা ফিরে পেতে সরকারের পক্ষ থেকে টোল ব্যবস্থার উপর নজরদারি বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা অত্যন্ত জরুরি।