লাইনে ফাটল, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজধানী এক্সপ্রেস থামালেন ট্র্যাকম্যান! বাঁচল হাজারো প্রাণ

Published on:

trackman mahadev

বিপদ থেকে বাঁচানোর জন্য স্বয়ং ঈশ্বর মানুষের রূপে আসেন। এই কথাটি আরো একবার প্রমাণিত হয় গেল। ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগেই হাজারো মানুষের প্রাণ রক্ষা করলেন রেলের একজন ট্র্যাকম্যান। ট্রেনের লাইনে গড়বড় দেখেই ট্রেন থামানোর জন্য ওই মানুষটি যা করলেন, তা হয়তো কারো একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। কারণ রেলের লাইনে সমস্যা দেখে স্টেশনে ও ট্রেনে যোগাযোগ করে থামানো যায়নি ট্রেনটিকে। শেষমেষ ট্র্যাক ম্যানের সাহসী পদক্ষেপ অনেকের প্রাণ বাঁচিয়ে দিলো।

কোঙ্কণ রেলওয়ে জোনে, একজন ট্র্যাকম্যান সকাল ৪.৫০-এ যখন ট্র্যাকগুলি পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত ছিলেন, তখন তিনি লক্ষ্য করেন যে ট্র্যাক জয়েন্টে করা ঢালাই অসম্পূর্ণ ছিল। এই সময়েই দিল্লি থেকে তিরুবনন্তপুরম পর্যন্ত চলমান রাজধানী সুপারফাস্ট ট্রেনটি একই বিপদ অঞ্চলের দিকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে আসছিল। ট্রেন থামানোর সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ট্র্যাকম্যান ট্রেনের দিকে ৫০০ মিটার দৌড়ে গিয়ে সাহসী উপায়ে ট্রেনটিকে থামাতে সফল হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শত শত যাত্রীর জীবন রক্ষা করেন ট্র্যাকম্যান।

WhatsApp Community Join Now

সজাগ ট্র্যাকম্যানের চেষ্টায় বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রেহাই

তথ্য অনুযায়ী, ঘটনাটি কোঙ্কণ রেলওয়ের কুমতা ও হোন্নাভার রেললাইনের মধ্যে ঘটেছে। প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও ট্র্যাকম্যান মহাদেব খুব ভোরে ট্র্যাক পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এই সময়ে, তিনি লক্ষ্য করেন যে এক জায়গায় ট্র্যাকের জয়েন্টে অসম্পূর্ণ ঢালাই করা হয়েছে। ঠিক এই মুহূর্তে দিল্লি থেকে তিরুবনন্তপুরমগামী রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনটি এই লাইনেই আসছিল। পরিস্থিতির বুঝে মহাদেব অবিলম্বে কুমতা রেলওয়ে স্টেশনে যোগাযোগ করেন এবং ট্রেন থামাতে বলেন। তবে ততক্ষণে রাজধানী এক্সপ্রেস কুমতা রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করেছে। এরপর তিনি রাজধানী ট্রেনের লোকো পাইলটের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও তিনি ব্যর্থ হন।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কয়েকশো যাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন মহাদেব

রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামানোর সব চেষ্টা করেও যখন তিনি ব্যর্থ হন, তখন ট্র্যাকম্যান মহাদেব সময় নষ্ট না করে, যে দিক থেকে ট্রেনটি আসছিল সেই দিকেই চিৎকার করতে করতে তিনি ছুটে যান। মহাদেব মাত্র ৫ মিনিটে ৫০০ মিটার দৌড়ে অবশেষে রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামান। তিনি লোকো পাইলটকে বিষয়টি জানান। এরপর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়। খবর পাওয়া মাত্রই তৎপর হয়ে ওঠে গোটা বিভাগ। সঙ্গে সঙ্গে রেলের কর্মচারীদের ওয়েল্ডিং মেশিনসহ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। ট্র্যাক জয়েন্ট মেরামত করার পরে রাজধানী এক্সপ্রেসকে কারোয়ারির দিকে পাঠানো হয়। এইভাবে দেবদূত হয়ে মহাদেব শত শত প্রাণ রক্ষা করেন।

পুরস্কৃত হয়েছেন ট্র্যাকম্যান মহাদেব

ভারতীয় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই ঘটনার কথা জানার পরেই ট্র্যাকম্যান মহাদেবকে সম্মান জানানো হয়। কোঙ্কণ রেলের কর্মকর্তারা মহাদেবকে ‘বীর’ উপাধি দিয়েছেন। তাঁর সাহসিকতা দেখে, কোঙ্কণ রেলওয়ের সিএমডি সন্তোষ কুমার ঝাঁ মহাদেবকে নগদ ১৫,০০০ টাকা দিয়ে সম্মানিত করেছেন। সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার বিএস নাডগেও মহাদেবকে সম্মান জানান।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন