ঋত্বিক পাত্রঃ বন্দে ভারতের পিছনের মস্তিষ্ক, অর্থাৎ যিনি এই ট্রেনকে তৈরি করেছেন তিনি সম্প্রতি ভারতীয় রেল নিয়ে বড় বয়ান দিয়েছেন। কেন্দ্র সরকার এবং রেলের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। আজ আমরা যার নিয়ে কথা বলছি তিনি সুধাংশু মণি। প্রাক্তন রেলওয়ে অফিসার, এক পডকাস্টে এসেছিলেন বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে এবং সেখানেই সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের আলোচনা করেন। প্রথমেই তিনি মনে করেন সরকারের এটা ভুল যে, তারা কেবল বন্দে ভারত নিয়েই পড়ে রয়েছে বাকি নন এসি ট্রেনের দিকে তেমন মনযোগ নেই।
উল্লেখ্য, আগস্ট ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ অবধি রেলওয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেছেন মণি। তিনি মনে করেন, বন্দে ভারত উচ্চ বিত্ত যাত্রীদের জন্য ভালো যারা আরো বেশি টাকা দিয়ে আরামে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু সরকারকে এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কথাও ভাবতে হবে। সবার পক্ষে বন্দে ভারতে চাপা সম্ভব নয়। এছাড়া গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন অংশে AC কোচে অসংরক্ষিত যাত্রীদের প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি মনে করেন রেল পরিকাঠামো উন্নতি করছে, স্টেশনের পুনঃউন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করলেও অসংরক্ষিত কোচে ভ্রমণকারী যাত্রীদের জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। মণির কথায়, বিহার, ওড়িশা এবং ইউপি থেকে আগত শ্রমিক থেকে শিক্ষার্থীর একটা বড় অংশ টিকিট ছাড়া সংরক্ষিত কামরায় চড়ে যান। তার কথায়, পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই খারাপ হয়েছে। বর্তমানে আবার AC কোচ বেশি পরিমাণে তৈরি করা হচ্ছে এবং NON AC কোচের পরিমাণ কমেছে বেশ খানিকটা।
ভারতীয় রেল নিয়ে বড় বয়ান সুধাংশু মণির
সুধাংশু মণি বলেন, রেলের তরফে ট্রেনে AC কোচের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কমেছে স্লিপার ক্লাসের পরিমাণ। সেক্ষেত্রে যাত্রীরা ঢুকে পড়ছে AC ক্লাসেই। এমন ঘটনা যে বেড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই তা স্বীকার করেন তিনি। সাথে রেলের ফোকাস হয়ে দাঁড়ায় বন্দে ভারতের মতো ট্রেন। সেটি সাধুবাদ পায় বটে, কিন্তু সাধারণ যাত্রীরা আরো বেশি সাধারণ ট্রেন দাবী করেন। মনির কথায়, বিরোধীরাও এটা বলতে সুযোগ পায় যে, সরকার কেবল অভিজাতদের কথাই ভাবতে ব্যস্ত।
আরও পড়ুনঃ রেশন, চাকরি দুর্নীতি অতীত! এবার মিড ডে মিল নিয়ে বড় ফাঁসল পশ্চিমবঙ্গ সরকার, শোরগোল বঙ্গে
শেষে তিনি স্বীকার করেন যে, সমালোচনা ঘটবেই। সোশ্যাল মিডিয়াতে গেলে প্রচুর এই ধরণের ঘটনার দেখা পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে আবার ভুল শোধরানোর জন্য রেল এসি কোচের উৎপাদন কমিয়ে নন-এসি কোচের উৎপাদন বাড়িয়েছে। কিন্তু তার কথায়, সেটাও ভুল। এসি কোচ বাড়ানো উচিত কিন্তু সাধারণ মানুষের ওপর তার যেন কোনো প্রভাব না পড়ে। তবেই এগিয়ে যেতে পারবে ভারতীয় রেল।