বাদ রবীন্দ্রনাথ, বাংলাদেশে বদলাতে পারে জাতীয় সঙ্গীত! আর রইবে না ‘আমার সোনার বাংলা’

Published on:

bangladesh

ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণের প্রতিবাদে ভয়ংকর আকার ধারণ করে ছাত্র আন্দোলন। পরিণত হয় রক্তাক্ত গণবিক্ষোভে। যার দরুন গত ৫ আগস্ট বিরাট চাপে পড়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন শেখ হাসিনা। এইরূপ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ জুড়ে চলছে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। সমস্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু এর পরেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।

মুজিবুরের বাংলাদেশ

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ‘আমার সোনার বাংলা’ রচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে ছিন্ন হয়ে তৈরি হয় বাংলাদেশ। আর এই মুক্তিযুদ্ধের প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে চলে যান। লন্ডন থেকে নয়াদিল্লি আসার পথে মুজিবুর রহমানের সফরসঙ্গী ছিলেন ভারতীয় কূনীতিক শশাঙ্ক শেখর ব্যানার্জি। এরপরে বাংলাদেশে যাওয়ার পথে বিমানে গান ধরেন মুজিবুর রহমান। তখন ওখানে তিনি স্থির করেন রবীন্দ্রনাথের রচিত এই গানই হবে জাতীয় সঙ্গীত। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে জাতীয় সঙ্গীত বদলে দাবি নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।

WhatsApp Community Join Now

জাতীয় সঙ্গীতের বিরোধিতা

বিভিন্ন সংগঠন সরব হয়েছে এই বিতর্কে। বিশেষত ইসলামি সংগঠনগুলি একযোগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত জাতীয় সঙ্গীত বাতিলের দাবিতে সোচ্চার। অন্যদিকে জাতীয় সঙ্গীত ধরে রাখতে প্রতিরোধ বার্তা দিল বাংলাদেশ ‘উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল দেশের প্রধান উপদেষ্টা দেশের প্রথম সারির দল বিএনপি এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই প্রসঙ্গে একটা কথাও বলতে শোনা যায়নি। কিন্তু গত বুধবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী সংবিধানের সঙ্গে জাতীয় সংগীতও পরিবর্তনের দাবি জানান। তাঁর বক্তব্য, ”জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতীয়। তাঁর গান কেন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে। তাছাড়া ‘আমার সোনার বাংলা….. গানটি ইসলামিক ভাবধারায় রচিত নয়।”

১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবকে হত্যার পর নতুন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের সরকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের দাবিতে কমিটি গড়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. দ্বীন মুহাম্মদকে ওই কমিটির তিনটি বৈঠক করে। সে কমিটি দুটো গানের একটিকে জাতীয় সংগীত করার প্রস্তাব করে প্রতিবেদন জমা দেয়। গান দুটো হল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘চল চল চল’ এবং ফররুখ আহমেদের ‘পাঞ্জেরী’ কবিতা। কিন্তু পরে আর এই প্রসঙ্গ নিয়ে বাক্য বিনিময় হয়নি। এখন গণ অভ্যুত্থানের পর সংবিধানের পাশাপাশি জাতীয় সঙ্গীতও বদলের দাবি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন